E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মেঘনা নদীর অবৈধ দখল মুক্তের দাবিতে নোয়াখালীতে মানববন্ধন

২০২১ জুন ০৪ ১৭:৪৬:৫৭
মেঘনা নদীর অবৈধ দখল মুক্তের দাবিতে নোয়াখালীতে মানববন্ধন

ইমাম উদ্দিন সুমন, নোয়াখালী : নোয়াখালীর সুবর্ণচর ও হাতিয়া উপজেলার সীমান্তবর্তী সুবর্ণচর উপজেলার ভূঁইয়ারহাট সংলগ্ন ৪নং ঘাট পাশ্ববর্তী মেঘনা নদীর অংশ অবৈধ দখল মুক্ত করার দাবীতে মানববন্ধন করেছে স্থানীয় এলাকাবাসী।

শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে মেঘনার খাল পাড়ে উপকূলীয় পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের ব্যানারে এ মানববন্ধনে অংশ্রগহণ করেন পাঁচশতাধিক বিভিন্ন পেশার লোকজন।

উপকূলীয় পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন নোয়াখালী শাখার সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিন তুহিনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের উপদেষ্টা জহিরুল ইসলাম টিটু, সভাপতি আব্দুল বারী বাবুল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মহিব উল্যা মহিব, সহ-সভাপতি হারন অর রশিদ, বৃক্ষ প্রেমী সাখাওয়াত উল্যাহ, প্রভাষক মিজানুর রহমান, প্রভাষক সফিকুল ইসলাম সাজু, কামাল চৌধুরী, শিক্ষক নেতা নাছিম ফারুকী, ইমাম উদ্দিন সুমন, ব্যবসায়ী নুরুল হুদা’সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের লোকজন।

বক্তারা বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও কিছু প্রভাবশালীর দীর্ঘদিন ধরে মেঘনা নদীর একটি বিশাল অংশ দখল করে নিয়েছে। জেলার সুবর্ণচর ও হাতিয়া উপজেলার সীমান্তবর্তী দক্ষিণ চরমজিদ, পশ্চিম চরবাটা ও চর মহিউদ্দিন এলাকার খালটিতে বাঁধ দিয়ে মাছের প্রজেক্ট ও বাড়ী নির্মাণের প্রতিযোগিত চলছে। তবে দখলকারীদের কেউ কেউ বলছেন নিজেদের বন্দোবস্তকৃত জায়গা তারা দখলে নিয়েছে। দখলকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলছে স্থানীয় প্রশাসন। মো: ইমাম উদ্দিন সুমন রিপোর্ট-

এক যুগ আগেও মেঘনার বুকে মিশে ছিল নোয়াখালীর সুবর্ণচর ও হাতিয়া উপজেলার সীমান্তবর্তী এ মেঘনা খালটি। সুবর্ণচরের ভূঁয়ারহাট সংলগ্ন ৪নং ঘাট হয়ে নৌপথে হাতিয়ায় যাতায়াত করতো লাখো মানুষ। কিন্তু কালের বিবর্তে মেঘনা সরে গেলেও মেঘনা খালটি থেকে যায় তার জায়গায়। বর্ষায় পানিতে টয়টুম্বর থাকলেও শুষ্ক মৌসুমে দেখতে অনেকটা চরই মনে হয়। তবে শুষ্ক মৌসুমে কিছু অংশজুড়ে পানিও থাকে। আর এ পানিই কৃষির পাশাপাশি স্থানীয় বিশ হাজার বাসিন্দাদের গৃহস্থালি কাজে পৌঁছে। কেউ গবাদিপশুর গোসলেও এ পানি ব্যবহার করেন। বারো মাসই এ খালে মাছ ধরেন স্থানীয় জেলেরা।

কিন্তু অভিযোগ, খালটিকে পুন:খনন না করায় অনেকটা চর হয়ে গেছে। ফলে স্থানীয় প্রভাবশালীরা বিভিন্ন অংশে বাঁধ দিয়ে মাছের প্রজেক্ট করছেন। আবার ঘর-বাড়ি তৈরির জন্য ভূমিহীনদের কাছে বিক্রিও করা হচ্ছে খাল।

সরেজমিনে দেখা যায়, মেঘনা খালের পূর্ব-দক্ষিণ অংশে কয়েকটি স্থানে বাঁধ দিয়ে মাছের প্রজেক্ট করা হয়েছে। খালের মাঝেই নির্মাণ করা হয়েছে বসত বাড়ি। ৯নং ওয়ার্ডের সাবেক জনপ্রতিনিধি আলমগীর, যুবলীগ নামধারী নাজিম উদ্দিন, নুর নবী এবং স্থানীয় প্রভাবশালী ৩২ কাশেম ও ১৬ কাশেম নামের কয়েকজনের বিরুদ্ধে খাল দখলের এ অভিযোগ। ঘটনাস্থলে অভিযুক্তদের অনেককে পাওয়া যায়নি। যাদের পাওয়া গেছে, তাদের অনেকে খাল দখল করার অভিযোগ অস্বীকার করেছে, বলছে তাদের কাগজপত্রের জমি, আর সাবেক ইউপি মেম্বার বলছে কিছুটা খালে গিয়েছে, তবে তা দ্রুতই অপসারণ করবেন তিনি।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বলছেন, তাদের নিষেধ শুনছেন না দখলকারীরা। তবে দখলের বিষয় ইতোমধ্যেই প্রশাসন অবগত হয়েছেন। সরেজমিন পরিদর্শন করে দখলকারীদের দ্রুত বাঁধ উচ্ছেদের হুশিয়ারি দেয়া হয়েছে। বাঁধ না সরালে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

গেল বছরের জানুয়ারিতে প্রশাসন এ খালটিতে দখলদারীদের উচ্ছেদ করে। আর এ বছর একই খালের পূর্ব অংশ দখল হচ্ছে। খালটি দখল উচ্ছেদ পূর্বক পুন:খনন করে জীবিকা পুনঃরুদ্ধারের পাশাপাশি শুকè মৌসুমে কৃষি কাজে ব্যবহৃত পানি সংকট থেকে মুক্তি দেয়ার দাবী স্থানীয়দের।

(এস/এসপি/জুন ০৪, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

১৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test