E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

রায়পুরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৪০ দোকান পুড়ে ছাই

২০১৪ অক্টোবর ১৫ ১৫:২৭:৫৭
রায়পুরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৪০ দোকান পুড়ে ছাই

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় অন্যতম বানিজ্য কেন্দ্র হায়দরগঞ্জ বাজারে বুধবার ভোরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৪০টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এসময় আগুন নিয়ন্ত্রনে আনতে গিয়ে ১০ জন আহত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক সর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। এতে প্রায় ২ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্ত দোকানিরা দাবি করেছেন। পরে বাজার ব্যবসায়ী ও স্থানয় লোকজন ৩ ঘন্টা সময়ের মধ্যে অনেকটা নিয়ন্ত্রনে আনে। 

রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আলম, উপজেলা চেয়ারম্যান মাষ্টার আলতাফ হোসেন হাওলাদার ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শহিদ উল্যা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

ক্ষতিগ্রস্থরা জানান, বুধবার রাত ৩ টার দিকে হায়দরগঞ্জ মধ্যে বাজারের উত্তর পাশের একটি ফলের দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। এতে মুহুর্তের মধ্যে অন্যান্য দোকানেও আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এসময় স্থানীয় লোকজন ও ব্যবসায়ীরা ৩ ঘণ্টাব্যাপী চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুন নেভানোর পরে লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী ও রামগঞ্জ থেকে ফায়ার সার্ভিসের ৪টি ইউনিট ঘটনাস্থল আসলে তারা স্থানীয়দের তোপের মুখে পড়ে। এসময় ১৩টি স্বর্ণের দোকান, ১৭টি মুদি দোকান, ৬টি কাপড়ের দোকান ও ৪টি সেলুন দোকানের মালামাল সম্পূর্ণ পুড়ে যায়।

উল্লেখ্য যে গত ১০ বছরে ধরে রায়পুর পৌরসহর, হায়দরগঞ্জ ও রাখালিয়া বাজারসহ বিভিন্নস্থানে দেড়শতাধীক অগ্নিকাণ্ডে ঘটনা ঘটে। ফলে এখানে প্রতিবছর বসতবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাটে অগ্নিকাণ্ডে ৫০ কোটি টাকার সম্পদ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। রায়পুর উপজেলায় অদ্যাবধি ফায়র সার্ভিস ষ্টেশন প্রতিষ্ঠিত হয়নি। লক্ষ্মীুপুর সদর ফায়ার ষ্টেশন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা রায়পুরে আসে আগুন নিভানোর কাজে অংশ নেয়। উপজেলা সদর থেকে জেলা সদরে অবস্থিত ফায়ার ষ্টেশনের দুরত্ব ২০ কিলোমিটার। উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে এর দুরত্ব ৪০ থেকে ৪৫ কিলোমিটার। এ কারণে উপজেলার কোথাও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে দুরত্বের কারণে জেলা শহর থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা পৌঁছার আগেই সবকিছু পুড়ে যায়। রায়পুর উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশন থাকলে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান ৭০ থেকে ৮০ কমে যাবে বলে জানান ব্যবসায়ী।

রায়পুর শহরের হল রোডের ব্যবসায়ী ও এক মাত্র পত্রিকার এজেন্ট হাজী আবু তাহের বলেন, বাজারে আগুন লাগলে ফায়ার সার্ভিস এসে পৌঁছার আগেই দোকানপাট পুড়ে ছাই হয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে। এতে হতাহতের সংখ্যাও বেড়ে যায়।

এলাকাবাসী জানায়, প্রতিবছর অগ্নিকাণ্ডে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পরও সরকার এখানে কোন ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশন স্থাপন করেনি। পৌরশহর ছাড়াও ১০টি ইউনিয়নে ছোট-বড় ২৬ টি হাট-বাজার রয়েছে। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি সরকারি প্রতিষ্ঠান, এশিয়ার বৃহত্তম ফিস হ্যাচারী, ১১টি সরকারি-বেসরকারী ব্যাংক এবং ৬টি কলেজসহ ১৫০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

রায়পুর পৌরসভার মেয়র এ বি এম জিলানী বলেন, জেলার সবচেয়ে বড় উপজেলা ও বাণিজ্য কেন্দ্র হওয়া সত্বেও রায়পুরে একটি ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশন নেই। এ কারণে উপজেলার বাসিন্দারা প্রতিবছর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে ফায়ার সার্ভিস স্থাপনের জন্য দাবি জানালেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

লক্ষ্মীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক ফরিদ আহমেদ চৌধুরী জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছে স্থানীয়দের সহযোগীতায় ৩ ঘন্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক সর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তাৎক্ষনিক নির্ণয় করা যায়নি।

যোগাযোগ করা হলে স্থানীয় সাংসদ মোহাম্মদ নোমান বলেন, রায়পুর বাসি দীঘদিন ধরে ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশনসহ ৪টি দাবি জানিয়ে আসছে। তিনি ইতিমধ্যে এ বিষয়ে সংসদে উপস্থাপন করলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয় বিদ্যুৎ উপ-কেন্দ্র, লঞ্চঘাট ও গ্যাসের দাবি পূরণ আশ্বাস দিয়েছেন। এর পরেই ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশন স্থাপন করা জন্য তিনি কাজ করছেন।

(এমআরএস/এএস/অক্টোবর ১৫, ২০১৪)




পাঠকের মতামত:

১৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test