E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

২৫ হাজার টাকার বিনিময় ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিলেন ইউপি সদস্য

২০২৩ জুলাই ৩০ ১৯:১৮:১৯
২৫ হাজার টাকার বিনিময় ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিলেন ইউপি সদস্য

ফরিদপুর প্রতিনিধি : ফরিদপুরে সালথায় বল্লভদী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড মেম্বার সেলিনা আক্তার এর বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে ধর্ষণের ঘটনা মিমাংসা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। 

গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ওয়ার্ডের মহিলা মেম্বার সেলিনা আক্তার ধর্ষিতার বাড়িতে এলাকায় শালিস বৈঠকের মাধ্যমে একটি ধর্ষণের ঘটনা ২৫ হাজার টাকার বিনিময়ে মিমাংসা করেছেন বলে ধর্ষিতার মা অভিযোগ করেছেন। জানা যায়, মুকসুদপুর উপজেলার খান্দার পাড় ইউনিয়নের দুব্বাসুর এলাকার পিতা ওমর মন্ডল ছেলে দেবা মন্ডল (১৬) পারস্পরিক আত্মীয় এক দিন মজুরের কিশোরীকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে দির্ঘদিন ধরে প্রেমের ও দৈহিক সম্পর্ক চালিয়ে আসছিল। শুক্রবার দুপুরে ২ টায় মা ঘরে না থাকায় ওই কিশোরীর ঘরে প্রবেশ করে। এরই মধ্যে এলাকার কিছু লোক বিষয়টি টের পেয়ে যায়। পরে সন্ধ্যায় ৬ টায় দেবা মন্ডল কে অনৈতিক কার্যকলাপের সময় প্রতিবেশিরা কিশোরীর ঘরে হাতে নাতে ধরে ফেলে। প্রতিবেশিরা ছেলে ও মেয়েকে আটক করে স্থানীয়। ওয়ার্ড মেম্বার সেলিনা আক্তার কে খবর দেয়।

অনৈতিক কার্যকলাপের ঘটনায় এলাকাবাসী ছেলে ও মেয়েকে বিয়ের জন্য উভয় পরিবারের উপর চাপ সৃষ্টি করে। ছেলের বাবা ওমর মন্ডল ও স্থানীয় মেম্বার দিদার ফকির ঘটনাটি মিমাংসার জন্য উঠে পড়ে লাগে। পরে রাতে এক শালিস বৈঠকের মাধ্যমে বল্লভদী ইউনিয়নের মেম্বার প্রভাব দেখিয়ে ২৫ হাজার টাকার বিনিময়ে মেয়ের পরিবারকে চাপ সৃষ্টি করে। মেয়ের মা দিন মজুর হওয়ায় বৈঠকে মিমাংসা করতে বাধ্য হয় বলে অনেকেই মহিলা মেম্বারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন।

এলাকাবাসী জানায়, আমরা সকলে চেয়েছিলাম ওই ঘটনায় ছেলে ও মেয়েকে বিয়ে দেওয়া হোক। কিন্তু ছেলের বাবা প্রভাবশালী হওয়ায় মেম্বারকে ম্যানেজ করে ঘটনাটি ভিন্ন ভাবে মিমাংসা করেছেন। শালিসে শনিবার সন্ধ্যায় ২৫ হাজার টাকা মেয়ের পরিবারকে দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেয় মেম্বার। মেয়ের মা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি মানুষের বাড়িতে দিন মজুরির কাজ করি। ওর বাবা মরার পর আমি একা। একটি ছেলে আছে সে আমার খোঁজ খবর নেয় না।আমি চেয়েছিলাম আইনের আশ্রয় নিতে কিন্তু মেম্বার বিষয়টি দেখবেন বলে শালিসের মাধ্যমে ২৫ হাজার টাকা ওই ঘটনার জন্য ক্ষতি পূরনের আশ্বাস দিয়েছে। ওরা প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে আমি কিছু বলতে ও করতেও পারছি না।

৪নং ওয়ার্ডের মহিলা মেম্বার সেলিনা আক্তার জানান, ঘটনাটি স্থানীয়দের নিয়ে মিমাংসা করা হয়েছে। ছেলে আর মেয়ের বয়স না হওয়ায় তাদেরকে বিয়ে দেওয়া হয় নাই। ছেলে পক্ষ থেকে নগদ টাকা দিতে না পারায় তাদের ভ্যান গাড়ি আটকে রাখা হয় আজ সন্ধ্যায় টাকা দিয়ে ছাড়িয়ে নিয়ে যাবে।

এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তথ্যসূত্রে জানায় টাকা দিয়ে ভ্যান গাড়িটি ছাড়িয়ে নিয়ে যায়।

বল্লভদী ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার সাইফুল ইসলাম (শাহীন) সাথে মিমাংসার ঘটনার বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন ঐ এলাকার মাতুব্বর ও মহিলা মেম্বার মিমাংসা করেছে শুনেছি তবে এমন ঘটনার নিন্দা জানাই।

সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ শেখ সাদিক জানান এমন ঘটনার কথা শুনেনি কেউ অভিযোগ করেনি করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সালথা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আক্তার হোসেন শাহিন জানান, এমন ঘটনা মিমাংসা করা তাদের উচিত হয়নি বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা হবে।

(পিবি/এসপি/জুলাই ৩০, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test