E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

থানা পুলিশের রহস্যজনক ভূমিকার বিরুদ্ধে ও শরিফুল হত্যার খুনিদের ফাঁসির দাবিতে প্রতীকি অনশন

২০২৩ নভেম্বর ২৯ ১৭:৪৫:২২
থানা পুলিশের রহস্যজনক ভূমিকার বিরুদ্ধে ও শরিফুল হত্যার খুনিদের ফাঁসির দাবিতে প্রতীকি অনশন

সঞ্জীব কুমার দাস, গাজীপুর : গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের কামড়া গ্রামের চাঞ্চল্যকর শরিফুল ইসলাম হত্যার ঘটনায় খুনিদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে পরিবারের  প্রতীকি অনশন পালন করেছন। বুধবার সকালে উপজেলার প্রধান গেইটের সামনে ঘণ্টাব্যপী এ অনশন কর্মসূচি পালন করে নিহতের পরিবার ও স্বজনেরা।

জানা যায়, উপজেলার কামড়া নিজ বাড়ির পার্শ্ববর্তী কালীগঞ্জ থানাধীন পোটান এলাকায় আজিজুল এর মুরগির ফার্মের দক্ষিণ পাশে বিবাদী ইসমাইল (২৮) ও ফাইজুল্লা (৩২) গ্যাংয়ের হাতে এলোপাতাড়ি মারধরের আঘাতে শরিফুল ইসলাম (৩৫) খুন হন। হত্যাকাণ্ডের ৪ মাসেও ধরাছোঁয়ার বাইরে খুনিরা। মুল ঘাতক গ্যাং লিডার ফয়জুল্লাহ, ইসমাইল, বাচ্চু মিয়া, মনসুর আলী, ছুরত আলী,সোহরাব, আঃরহিম, আলমগীর, হামজা,সাইফুল্লাহ সহ অজ্ঞাত আরও ৩/৪ জন জড়িত সব খুনিদের দ্রুত গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে অনশন শেষে বিক্ষোভ মিছিল করেছে।

পরিবারের প্রতীকি অনশনে নিহত শরিফুলের মা লাইলি বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে আক্ষেপ জানিয়ে বলেন, আমার ছেলের পাওনা ১০ লক্ষ টাকা চাওয়ায় গত ০২/০৪/২৩ ইং বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে আজিজুল এর মুরগি ফার্মের পাশে ১০/১২ মিলে আমার ছেলেকে হত্যা করেছে। এলাকার বহু মানুষই জানে তাকে হত্যা করা হয়। এত দিন হয়ে গেলেও হত্যাকারীরা এখনো ধরা পড়েনি। পুলিশের রহস্যজনক ভূমিকায় আসামিরা ধরা ছোঁয়া বাহিরে। বিবাদীরা উল্টো পুরো পরিবারকে শেষ করে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। পরিবারে একমাত্র উপার্জনকারী ছিল আমার ছেলে। আমি খুনিদের ফাঁসি চাই, ছেলে হত্যার বিচার চাই। খুনিরা গ্রেফতার না হওয়ায় আতঙ্কের মাঝে আছি। নিহত শরিফুলের বৃদ্ধ বাবা, ভাই -বোন চাচা, চাচি,মামা ও স্থানীয় ব্যবসায়ী সুরুজ মিয়াসহ উপস্থিত সকলে দ্রুত শরিফুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত প্রকৃত আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার ও ফাঁসি দাবি জানান।

মামলা সুত্রে, গত ০২ এপ্রিল রবিবার রাত অনুমান ৮টার সময় কালীগঞ্জ থানার পোটান এলাকায় টাকা পাওনা নিয়ে পূর্ব বিরোধের জেরে ইসমাইল ও ফুয়জুল্লার গ্যাং এর হাতে লোহার রডের এলোপাতাড়ি মারধরের আঘাতে শরিফুল ইসলাম (৩৫) খুন হন। নিহতের মা লাইলি বেগম ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রাপ্ত হইয়া বাদী হয়ে ১১ জনের নামে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা (১৪) তারিখ ১৭/০১/২৩।

বাদী লাইলি বেগম জানায় সঠিক তদন্ত ও মেডিক্যাল রিপোর্ট পর্যালোচনা না করে থানা পুলিশ গত ৩১/১০/২০২৩ তারিখে গাজীপুর বিজ্ঞ আদালতে মামলাটির চুড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করেন। ময়নাতদন্ত মোতাবেক রিপোর্টে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। নিহত শরিফুল ইসলামের বৃদ্ধ বাবা শামসুদ্দিন বলেন, আমার ছেলে আসামি ইসমাইল এর নিকট পাওনা ১০ লক্ষ টাকা ফেরত চাওয়ার কারনে আসামিরা আমার ছেলে শরিফুল কে হত্যা করে। নিহতের বড় ভাই আরও জানায় পিবিআই অথবা সিআইডি তদন্ত করিলে আমার ভাইয়ের হত্যার রহস্য বেড়িয়ে আসবে এবং ন্যায়বিচার পাব।

কালীগঞ্জ থানার ওসি ফায়েজুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় প্রথমে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা ঐ মামলার আলোকে বিজ্ঞ আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করেন।পরবর্তীতে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রাপ্ত হইয়া নিহতের মা বাদী হয়ে লাইলি বেগম ১১ জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার পরপরই আসামিরা পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে এখনো আটক করা সম্ভব হয়নি। আসামিদের ধরতে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হচ্ছে। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ইতিমধ্যেই মামলার ১১নং আসামী আলমগীর (৪৫) পিতা আমইড়া সাং চাঁদপুর কাপাসিয়া কে গ্রেফতার করা হয়েছে। আশাকরি শিগগিরই সবাইকে গ্রেফতার করা হবে।


(এসকেডি/এএস/নভেম্বর ২৯, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

০২ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test