E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নীলফামারীতে ভোট প্রদান, সন্তোষজনক ভোটার উপস্থিতি

২০২৪ জানুয়ারি ০৭ ১৪:৫২:৫১
শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নীলফামারীতে ভোট প্রদান, সন্তোষজনক ভোটার উপস্থিতি

ওয়াজেদুর রহমান কনক, নীলফামারী : ভোর থেকে কুয়াশার চাদরে ঢেকে ছিল নীলফামারীর জনজীবন। বেলা বাড়ার সাথে সাথে চারদিক থেকে কুয়াশা সরে গিয়ে আলো ঝলমল করে উঠলে ভোটার উপস্থিতিও বাড়তে থাকে।

নীলফামারী শহরের আলিয়া মাদ্রাসা ভোট কেন্দ্র সকাল আটটা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। নীলফামারী-২ আসনের এই কেন্দ্রটি স্বতন্ত্র প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদিনের বাস ভবন পায়ে হাঁটা পথ। ১২ জন আনসার ও এক জন পুলিশ সদস্য এই কেন্দ্রের দ্বায়িত্বে নিয়োজিত আছে। মোট ভোটার এই কেন্দ্রে ২৮৩৭ জন। ৬টি বুথে আট জন পুরুষ ও ৪ জন মহিলা আনসার সদস্য নিয়োজিত আছেন।

নারী-পুরুষ একে একে এসে কেন্দ্রটিতে ভোট দিচ্ছেন সকাল থেকেই। সকাল থেকেই যারা ভোট দিচ্ছেন, তাদের মধ্যে নারী ভোটারের সংখ্যাই বেশি।

রবিবার (৭ জানুয়ারি) সকাল ১০টা ৩০ মিনিটের তার নিজ কেন্দ্র উদয়ন বিদ্যাপীঠে ভোট দেন আসাদুজ্জামান নূর।

ভোট প্রদান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘আমরা যেভাবে জনসমাগম দেখছি। মানুষের মধ্যে যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা দেখছি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি আমাদের নৌকা মার্কা জয়যুক্ত হবে। গণতন্ত্রের মূল বিষয়টা হলো জনগণ সেখানে অংশ গ্রহণ করছে কী করছে না। কোনো ব্যক্তি বা দল অংশ গ্রহণ করার বিষয়ে গণতন্ত্র নির্ভরশীল নয়। জনগণ যা চায় সেটাই গণতন্ত্র। আর যেটা চায় না সেটা আমাদের বর্জন করা উচিৎ। আমরা যেটা দেখছি জনগণ বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করছে। জনগণ এ দিনটির জন্য অপেক্ষায় ছিল৷ একটা সিলের মাধ্যমে তারা তাদের মতামত প্রকাশ করছে। এই যে মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা জনগণ এটাকে লালন করে। এ লালনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র বিকশিত হয়।’

এর আগে সকাল ৯ টার দিকে নীলফামারী আলিয়া(ফাজিল) মাদ্রাসা কেন্দ্র ভোট দিতে এসে স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়নাল আবেদীন সাংবাদিকদের তার আসনের বেশ কিছু কেন্দ্রে সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে জোরজবরদস্তি ভোট প্রদানের অভিযোগ করেন।

এ অভিযোগের বিষয়ে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘আমি এটুকু জোর দিয়ে বলতে পারি কোনো ধরনের জোরজবরদস্তি মূলক আচরণ মানুষ পছন্দ করে না। আমরা প্রত্যেক প্রার্থী এসব বিষয়ে অত্যন্ত সচেতন। আমাদের দলের প্রত্যেক নেতাকর্মীকে এভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এমন কোনো আচরণ আমরা করবো না, যা মানুষ পছন্দ করে না। যদি কোনো অভিযোগ থাকে নির্বাচনের বিধিমালা অনুযায়ী অভিযোগ করতে পারে।’

আসাদুজ্জামান নূর ১৯৬৩ সালে তদান্তাধীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নে যোগদানের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনীতিতে যোগদান করেন। ১৯৬৫ সালে তিনি নীলফামারী কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিনি পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংস্কৃতিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন তিনি, পরবর্তীতে দেশ স্বাধীনের পর কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগদান করেন। দীর্ঘদিন প্রত্যক্ষ রাজনীতি থেকে নিজেকে বিরত রেখে সংস্কৃতি কর্মী হিসেবে নানান সামাজিক-সাংস্কৃতিক আন্দোলনে নিজেকে নিয়োজিত রাখেন এবং স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবীতে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের সঙ্গে আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।

১৯৯৮ সালের মাঝামাঝি পর্যায়ে তিনি আবারও প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে যুক্ত হন এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। ২০০২ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হন এবং পরবর্তীতে ২০০৯ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদকের দায়িত্ব লাভ করেন।

আসাদুজ্জামান নূর নীলফামারী-২ আসন থেকে ২০০১, ২০০৮ এবং ২০১৪ সালে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। ৯ম জাতীয় সংসদের বিভিন্ন সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে সদস্য হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৩ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর ১২ জানুয়ারি গঠিত মন্ত্রিসভায় সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন তিনি। ২০১৮ সালের একাদশ নির্বাচনে তিনি একই আসন থেকে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

(ওআরকে/এএস/জানুয়ারি ০৭, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test