E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কনৌজ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জীর্ণ ভবনেই চলছে শিশুদের পাঠদান

২০১৪ নভেম্বর ২৬ ২০:৩৩:৩৬
কনৌজ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জীর্ণ ভবনেই চলছে শিশুদের পাঠদান

নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার কনৌজ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বেহাল অবস্থা। পরিত্যক্ত ভবন যে কোন সময় ভেঙ্গে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, অবিভাবক ও সচেতন মহল।

সংশ্লিষ্ট বিভাগকে বার বার অবগত করেও কোন কাজ হয়নি বলে জানান শিক্ষক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিক জেবুন নেসা বেগম জানান, ১৯৪৮ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। কনৌজ গ্রামের শিক্ষানুরাগী মোঃ মীর হোসেন এই অজোপাড়া গাঁয়ে শিশুদের শিক্ষা ও জ্ঞান অর্জনের জন্য ৩৩শতক জমি দান করেন এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি করার জন্য ।

দেশ স্বাধীন হওয়ার পূর্বে প্রতিষ্ঠানটি নানা সমস্যায় জর্জড়িত থাকলেও স্বাধীনতা অর্জনের পর বিদ্যালয়টিকে সরকারি করন করা হয়। তখন ইট দ্বারা টিনশেডের তিনটি কক্ষ নির্মাণ করে পাঠদান করা হতো। পরবর্তীতে ১৯৯৪ সালে চার কক্ষ বিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণ করা হয়, যার মাত্র ৩টি ও পরিত্যক্ত ভবনের ১টি মিলে মোটসহ ৪টি কক্ষে গাদাগাদি করে এখন পাঠ গ্রহণ করছে শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘদিন কোন সংস্কার না করায় বর্তমানে নতুন এই ভবনের বিভিন্ন জায়গা থেকে প্লাষ্টার খসে পড়ে যাচ্ছে। ভবনের বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা দেয়াই অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হলেও শ্রেণি কক্ষের সংকটের কারণে কর্তৃপক্ষ এইসব ঝুঁকিপূর্ণ ভবনসহ বিদ্যালয়টির উত্তর দিকে অবস্থিত ১৭ বছর পূর্বে পরিত্যক্ত ঘোষনা করা টিনশেডের দরজা-জানালা নষ্ট হওয়া কক্ষে পাঠদান করতে বাধ্য হচ্ছেন।

দীর্ঘদিন পূর্বে টিনশেডের কক্ষগুলো পরিত্যক্ত ঘোষণা করলেও কক্ষের স্বল্পতার কারণে ওই কক্ষগুলোতে শিক্ষার্থীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাঠগ্রহণ করতে হচ্ছে। দীর্ঘদিন পূর্বে এই ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হলেও সরকারি ভাবে ভেঙ্গে ফেলে নতুন করে ভবন নির্মাণ করার কোন উদ্যোগ এখনও পর্যন্ত গ্রহণ করা হয়নি।

বিদ্যালয় চলাকালে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা সবার অজান্তেই দরজা-জানালা বিহীন এইসব কক্ষগুলোতে খেলাধুলা করে। যার কারণে যে কোন বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। রক্ষণাবেক্ষণর অভাবে পরিত্যক্ত এই ভবনের কক্ষগুলোর কাঠের তৈরি করা দরজা-জানালা, ছাউনির টিনসহ হাজার-হাজার টাকার সম্পদ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

গত কয়েক বছর থেকে সমাপনি পরীক্ষায় শতভাগ পাশ থাকলেও বিদ্যালয়টি বড়ই অবহেলিত। বিদ্যালয়টিতে প্রতিদিন প্রায় ১৫০জন শিক্ষার্থী পাঠগ্রহণ করলেও তাদের জন্য পর্যাপ্ত বেঞ্চ, শ্রেণিকক্ষ, শিক্ষকসহ লাইব্রেরী নেই। যার কারণে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশুনার চরম ক্ষতি হচ্ছে। ছোট্ট একটি খেলার মাঠ থাকলেও সংস্কারের অভাবে মাঠটিও খেলার অনুপযোগী। বিদ্যালয়টিতে নিয়মানুসারে চার জন শিক্ষকের পদ থাকলেও দীর্ঘদিন যাবত আছে মাত্র তিনজন শিক্ষক। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পরিত্যক্ত এই ভবনের দরজা-জানালা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এলাকার কতিপয় দুর্বৃত্ত রাতের আধাঁরে এই সব খোলা কক্ষে প্রবেশ করে বিভিন্ন রকমের অনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে।

বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সাহেব আলী জানান, বিদ্যালয়টি খুবই অবহেলিত। বর্তমানে বিদ্যালয়টির চারপাশে কোন প্রাচীর না থাকায় শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে পাঠগ্রহণের পুরো সময়টা। বিদ্যালয়টির সকল সমস্যা সমাধান কল্পে আমরা একাধিকবার উপরমহলে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোন ফল পাইনি । এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মজনুর রহমান জানান, এই বিদ্যালয়ের সমস্যা চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জানানো হয়েছে ।


(বিএম/এসসি/নভেম্বর২৬,২০১৪)

পাঠকের মতামত:

১৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test