E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

পঙ্গু হয়েও স্বাভাবিক জীবন নিয়ে বাঁচার স্বপ্ন দেখছেন জহুরুল

২০১৪ ডিসেম্বর ০৩ ১৪:৫২:০৯
পঙ্গু হয়েও স্বাভাবিক জীবন নিয়ে বাঁচার স্বপ্ন দেখছেন জহুরুল

সিংড়া (নাটোর) প্রতিনিধি :পঙ্গু হওয়ার পরও স্বাভাবিক জীবন নিয়ে বাঁচার স্বপ্ন দেখছেন অসহায় যুবক জহুরুল। ৮ বছর আগে স্ত্রীকে নিয়ে কাজের সন্ধানে ঢাকায় গিয়েছিল জহুরুল। কিন্তু গত বছর দূর্ঘটনায় পা হারিয়ে এখন সে অসহায় জীবন যাপন করছে।

বর্তমানে তার সাথে প্রতিনিয়ত খারাপ ব্যবহার করে যাচ্ছে। আশা ছিল তার গচ্ছিত ৪০ হাজার টাকা দিয়ে প্লাষ্টিকের পা লাগিয়ে স্বাভাবিক ভাবে চলাফেরা করবেন কিন্তু সে আশাও গুড়েবালী। গত মাসে চিকিৎসার বাবদ আরও কিছু টাকার জন্য বাড়িতে এসেছিল জহুরুল কিন্তু তার স্ত্রী ফোনে তাকে আগেই জানিয়ে দিয়েছেন “তোমায় তালাক দিয়েছি”।

তবে ঢাকা ফেরত জহুরুল এখনও অদম্য মনোবল। পা লাগিয়ে আবারও স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে চান তিনি। এক পা নিয়েই দ্রুত পথচলা আর গন্তব্যস্থলে ছুটে যাচ্ছেন অনায়াসেই। জহুরুল সিংড়া উপজেলার বামিহাল গ্রামের মৃত ইয়াছিন এর পুত্র। জহুরুল এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে জানায়, ১৬ বছর আগে সিংড়া উপজেলার সুকাশ ইউনিয়নের ছিলামপুরে ওসের আকন্দ এর মেয়ে লাইলীকে বিয়ে করেন। রনবাঘা বাজারে ফার্নিচার দোকান ছিল তার। কাঠমিস্ত্রী হিসেবে ভালো কাজ জানত। ৮ বছর পূর্বে কাজের সন্ধানে স্ত্রী লাইলীকে নিয়ে ঢাকায় চলে যায়। আশ্রয় নেয় মুরগী ব্যবসায়ী জসিমের বাড়িতে। প্রথমে তার স্ত্রী সাভারে এক গার্মেন্টসে চাকুরী নেয়। রানা প্লাজা ধংসের দুই বছর আগে রানা প্লাজার গার্মেন্টসে চাকুরী করত লাইলী। পুরনো কার্ড দেখিয়ে রানা প্লাজার নাম করে এ চাকুরী কে পুঁজি করে ভাগ্য ফিরেছে তার। তার ছেলের বিকাশ নাম্বারে টাকা নিয়েছে কয়েকবার। এভাবে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে লাইলী।পূর্বেও কার্ড দেখিয়ে সে কয়েক দফায় টাকা উত্তোলন করে বলে জানায় জহুরুল।

কিন্তু ভাগ্য ফিরেনি জহুরুলের। ভালোবাসার টানে ১৬ বছর আগে বিয়ে করে এখন ভুলের মাশুল গুনছে সে। এক দুর্ঘটনায় তার ডান পা ফেলতে হয়। তারপর দীর্ঘদিন সে সিরাজগঞ্জের কুমুদিনী হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়। এর জন্য কয়েক লক্ষ টাকা ও খরচ হয়েছে। পা হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়ে জহুরুল। পায়ের চিকিৎসা বাবদ তার ভাই মালয়েশিয়া থেকে ৫০ হাজার টাকা পাঠান। এর মধ্যে স্ত্রী লাইলীর নিকট জহুরুল ৪০ হাজার টাকা রাখতে দেয়। টাকা দেয়ার পর ও চিকিৎসা হয়নি জহুরুলের। বরং লাইলীর বেপরোয়া জীবন তাকে নিয়ে গেছে বিপথে।

প্রতিবাদ করায় জহুরুলকে বারবার তালাকের হুমকি দিচ্ছে লাইলী। জহুরুল এখন পঙ্গুত্ব জীবনের সঙ্গী। লাইলীর প্রতি তার অগাধ ভালবাসা। তাই তার বিশ্বাস লাইলী বেপরোয়া জীবন থেকে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে এবং উন্নত চিকিৎসা করে তাকে সুস্থ করে তুলবে।

(এমএমএএআর/এসসি/ডিসেম্বর০৩,২০১৪)

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test