E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নিমগাছ থেকে পড়া রসকে অলৌকিক বলে উপার্জনের ফন্দি!

২০১৫ জানুয়ারি ৩১ ১৮:৪৩:২৫
নিমগাছ থেকে পড়া রসকে অলৌকিক বলে উপার্জনের ফন্দি!

নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার কাটরাশইন গ্রামের একটি নিমগাছ থেকে অলৌকিক ভাবে রস পড়ছে। কেউ কেউ বলছে ওই রস ভীষন মিষ্টি। এমন কি যে যে নিয়তে এই রস পান করছেন তাদের সেই নিয়ত পূরণ হচ্ছে এবং বিভিন্ন রোগ হতে মুক্তি পাচ্ছেন বলেও চালানো হয় প্রচারনা। এতে ওই গাছের রস পান করার জন্য এলাকার বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিনিয়ত বিপুল সংখ্যক উৎসুক জনতা ভিড় জমাচ্ছেন সেখানে। এমন খবর শুনে শনিবার সেখানে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার কাটরাশইন বাজারের উত্তর পার্শ্বে অবস্থিত একটি নিমগাছের কান্ডের কাছ ওপর থেকে খেজুর গাছের মত ফোটায় ফোটায় রস পড়ছে। স্থানীয় বাবলু (৪০) নামে এক ব্যক্তি তার এক মহিলা (৫০) জনৈক  (রোস্তমের মেয়ে) সঙ্গীকে নিয়ে খাদেম সেজে গাছের চারিধার লাল কাপড় দিয়ে ঘিরে ঠিক মাজারের মত করে সাজিয়ে রস সংগ্রহ করছে। কোন ভাবেই মহিরা খাদেম তার বললেননা। তাদের মতে তারা নিজেরা পাক-পবিত্র হয়ে ওই রস সংগ্রহ করে আগ্রহী লোকজনদের দিচ্ছে। তাদের কোন দাবী নেই। তবে যার যা ইচ্ছা তা মন থেকে ওই গাছের গোড়ায় হাদিয়া দিয়ে যাও। এই রস খেলে তোমাদের রোগ-বালাইসহ মনের সকল আশা পুরন হবে। এমন কথা শুনে লোকজন ওই গাছের গোড়ায় হাদিয়া দিতে কার্পন্য করছেনা। তবে ওই খাদেমদের কথা শুনে অলৌকিক ভাবে বের হওয়া রস  মুখে দিয়ে অনেকেই বলছে খুব মিষ্টি। এতে লোভ সামলাতে না পেরে এই প্রতিবেদক এক ফোটা রস হাতের তালুতে নিয়ে মুখে দিতে গিয়ে নিম গাছের কাঁচা পাতা বা কাঠের মতো তীব্র ঝাঁঝ অনুভুত হয়। মুখে দিলে হালকা মিষ্টির সঙ্গে তীব্র তিতা অনুভুত হয়।

স্থানীয় লোকজন জানায়, গত মঙ্গলবার থেকে নিমগাছে সুমিষ্ট রস পাওয়া যাচ্ছে এমন কথা ছড়িয়ে পড়লে এলাকা ও পাশ্ববর্তী এলাকার মানুষের মাঝে ব্যাপক কৌতুহলের সৃষ্টি হয়। এই রস সাধারণ কোন রস নয় ভেবে এলাকার বিভিন্ন স্থান হতে উৎসুক জনতা একনজর দেখার পাশাপাশি ঘটি-বাটি, বোতল হাতে ছুটেএসে এই রস পান করার জন্য প্রতিনিয়ত ভিড় জমাচ্ছেন। রস পান করতে আসা পার্শ্ববর্তী ভান্ডারা গ্রামের রমেন্দ্র নাথ পাল (৫৫), জোবায়ের হোসেন (৩৬), কাজীপাড়া গ্রামের রেজাউল কাজী (৪০) জানান, এই রস খেয়ে দুরারোগ্য ব্যধি ভালো হবে, এমন বিশ্বাসে অনেকেই রস সংগ্রহ করে পান করছেন। তবে চা চামচে ১ চামচ খাওয়াই কঠিন। এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা বাবলু সোনার (৪০), আব্দুর রহিম (৬০), চন্দ্র বিবি (৪২), বানেছা (২৮) সহ অনেকে জানান, বিভিন্ন গোপন রোগে এই রস পান করে উপকৃত হবেন এমন নিয়ত নিয়েই তারা এসেছেন। এবিষয়ে সদ্য অবসরপ্রাপ্ত কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মোঃ নুরুজ্জামান মন্ডল এই প্রতিবেদককে জানান, প্রতিটি গাছের বাড়ন্ত প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হলে রস বের হতে পারে। তবে নিম গাছের রস মধুর মত মিষ্টি হবে, এমন কথা তিনি কোনদিন শোনেননি। তবে এ বিষয়কে পুঁজি করে কেউ সাধারন মানুষকে যেন ঠকাতে না পারে বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য প্রশাসনকে আহ্বান জানান এলাকার সচেতন মহল।

(বিএম/পি/জানুয়ারি ৩১, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test