E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বাগেরহাটে দুটি বেড়িবাঁধে ভাঙ্গন, আতঙ্কে এলাকাবাসী

২০১৫ জুলাই ২৭ ২০:০৭:৫৩
বাগেরহাটে দুটি বেড়িবাঁধে ভাঙ্গন, আতঙ্কে এলাকাবাসী

বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটের শরণখোলা ও সদর উপজেলার দু’টি বেড়িবাঁধের একাধিক স্থানে ভয়াবহ ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বাঁধ দু’টি ভাঙ্গতে থাকায় এলাকাবাসীর মাঝে বিরাজ করছে আতঙ্ক। জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হবার আশঙ্কায় এলকাবাসী বেড়িবাঁধের ভাঙ্গন ঠেকাতে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে কাজ করছেন।

শরণখোলা উপজেলার সাউথখালী ও সদর উপজেলার কুলিয়রাদাইড় এলাকায় পাউবো’র ৩৫/১ পোল্ডার ও নাজিরপুর প্রকল্পের বেড়িবাঁধের কমপক্ষে ১০টি পয়েন্ট ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে। ভাঙ্গন ঠেকাতে জরুরি ভিত্তিতে এসব এলাকায় কাজ শুরু না হলে সাউথখালী ও বাগেরহাট সদরের বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের কমপক্ষে ১০টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের কুলিয়ারদাইড় গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল সামাদ খান (৮৫) বলেন, ভৈরব নদীর ভাঙ্গনে গত ২০ বছরে তার প্রায় ২০ বিঘা জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের কারণে পানি উন্নয়ন বোর্ড এই এলাকায় তিন দফা তাদের বেড়িবাঁধ নতুন করে নির্মান করেছে।

একই গ্রামের রাজ্জক পাইক (৬৫) জানান, নাজিরপুর প্রকল্পের ভাঙ্গনের মুখে পড়া বাঁধের এই অংশে মাত্র ১২ দিন আগে পাইলিং এর কাজ হয়েছে। কিন্তু ২ সপ্তাহ না পেরুতেই শনিবার (২৫ জুলাই) রাতে জোয়ারের সময় পাইলিং নিয়ে বাঁধটির দু’টি অংশ নদীতে বিলীন হয়েছে।

জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেলে যে কোন মুহূর্তে বাকি অংশ ভেঙ্গে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। বাঁধ রক্ষায় পাওবো’র জরুরি ভিত্তিতে গাছের বল্লি দিয়ে পাইলিং এর কাজ ঠিকাদার সঠিকভাবে না করায় এমন অবস্থা হয়েছে বলে দাবি তার।

বাঁধ সংলগ্ন এলাকার পান চাষী অলক কুমার সেন (৪৫) বলেন, বাঁধ রক্ষায় পাইলিং এর কাজ হলেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কেউ এলাকায় আসেনি। ঠিকাদার দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে কাজ শেষ করেছে। আমরা কয়েক দফা পানি উন্নয়ন বোর্ডে গিয়েও কোন লাভ হয়নি।

বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের নারী কাউন্সিলর মিসেন মিতা বলেন, ভাঙ্গন ঠেকাতে এখনই জরুরী ব্যবস্থা না নেয়া হলে ইউনিয়নের কুলিয়াদাইড়, বিষ্ণপুর, কুবিষ্ণপুরসহ ৪টি গ্রাম জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাবে।

বাঁধটি রক্ষায় রবিবার দিনভর মাটি ও বালির বস্তা ফেলে এবং গাছের বল্লি দিয়ে এলাকার ৭০ থেকে ৮০ জন মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে কাজ করেছেন। কয়েকবার খবর দেওয়া হলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড বা কোন জনপ্রতিনিধি এলাকায় আসেননি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করে এলাকাবাসী।

শরণখোলা উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নে ভাঙ্গনের কবলে থাকা পাউবো’র ৩৫/১ পোল্ডারে ৩টি স্থানে প্রায় ৫০০ মিটার এলাকার বেড়িবাঁধ এরই মধ্যে বড় ধরণের ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে। এছাড়া আরো কয়েকটি স্থান ভাঙ্গনের মুখে রয়েছে। যেকোন সময় বাঁধটি ভেঙ্গে এসব এলাকার কয়েক হাজার মানুষ প্লাবিত হবার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: মাইন উদ্দিন বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩৫/১ পোল্ডারের বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার সাউথখালীর ভাঙ্গন রোধে এরই মধ্যে কাজ শুরু হয়েছে। আর সদর উপজেলার নাজিরপুর প্রকল্পের কুলিয়াদাইড় এলাকায় ভাঙ্গন ঠেকাতে প্রয়োজনী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। আমাদের কর্মকর্তারা সার্বক্ষনিক ওইসব এলাকায় নজর রাখছে।

(একে/পিএস/জুলাই ২৭, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test