E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

নাটোরের বড়াইগ্রামে চুরির অপরাধে অমানুষিক নির্যাতন

২০১৫ আগস্ট ০৪ ২১:৫৪:৪১
নাটোরের বড়াইগ্রামে চুরির অপরাধে অমানুষিক নির্যাতন

নাটোর প্রতিনিধি : চুরির অপরাধে এবার নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার দক্ষিণ মালিপাড়া গ্রামে শাকিল কাজী (১২) নামে এক কিশোর সহ দুই জনকে গাছের সাথে বেঁধে বেধড়ক পেটানো হয়েছে। অপরজন হলো আবু সামা (৩৬)। গুরুতর আহত হওয়ার পরও তাদের হাসপাতালে ভর্তি না করে বাড়িতেই চিকিৎসাদেওয়া হচ্ছে। থানায় অভিযোগ করতে দেওয়া হয়নি। তবে পুলিশ বলছে বিষয়টি তাদের জানা নাই।

মঙ্গলবার সরেজমিন এলাকায় গিয়ে জানা যায়, শুক্রবার রাতে বড়াইগ্রাম উপজেলার দক্ষিণ মালিপাড়া গ্রামের বোবার মোড়ে বুলবুল হোসেনের মুদির দোকানে চুরি হয়। এঘটনায় রবিবার বিকেলে সৌদি প্রবাসী রবিউল করিমের নির্দেশে আবু সামা (৩৬) ও শাকিল কাজী (১২) নামে দুজনকে সন্দেহ মূলক ভাবে আটক করা হয়। পরে তাদেরকে ওই দোকানের সামনের দু’টি সুপারি গাছের সাথে বেঁধে বেধড়ক পেটানো হলে তারা গুরুতর আহত হয়। এ সময় তারা আকুতি জানালেও তারা পিটুনীর হাত থেকে রক্ষা পায়নি। পেটানোর সময় তাদের স্বজনরা এগিয়ে গেলে তাদেরও চর থাপ্পর দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। প্রায় ঘন্টাব্যাপী নির্যাতন চালানো পরে স্থানীয় ইউপি সদস্যের হস্তক্ষেপে তাদের উদ্ধার করা হলেও হাসপাতালে ভর্তি করানো বা থানায় অভিযোগ করানো সম্ভব হয়নি। পরে ওই সৌদি প্রবাসীর নির্দেশে তাদের বাড়িতে রেখেই চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

স্থানীয় মাতব্বর আব্দুস সোবহান জানান, চুরির সাথে জড়িত থাকায় তাদেরকে সামাজিক ভাবে সাজার ব্যবস্থা করা হয়েছে। নেছামুদ্দিনের ছেলে রবিউলের নির্দেশে মোকলেছের ছেলে সাইদুল তাদের গাছের সাথে বেঁধে পিটিয়েছে। নির্যাতিত আবু সামা জানান, তাকে অন্যায় ভাবে গাছের সাথে বেঁধে পিটিয়ে আহত করা হয়। রবিউলের লোকেরা হুমকি দিচ্ছে, হাসপাতালে ভর্তি হলে বা থানায় অভিযোগ করলে প্রাণে মেরে ফেলা হবে।

রবিউল করিম গাছের সাথে দু’জনকে পেটানোর কথা স্বীকার করে বলেন, সামাজিক ভাবে তাদের বিচার করা হয়েছে। এভাবেই আমাদের সামাজিক বিচার করা হয়। আমি উপস্থিত থাকায় তাদেরকে বেশী মারধোর করা হয়নি। এখন মানবিক কারনে আমি নিজে তাদের চিকিৎসা করাচ্ছি। আমিতো একা নই সমাজের মহিদুল, শাহজাহান, শফিকুলসহ অনেক নেতা উপস্থিত ছিলেন ওই বিচারে। স্থানীয় ইউপি সদস্য কামরুল ইসলাম জানান, তিনি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকে গাছের সাথে বাঁধা অবস্থায় দেখেননি। তবে চুরির অপরাধে মারপিট করা হয় বলে শুনেছেন। পরে উপস্থিত সকলের সম্মতিতে এবং পুলিশের সাথে কথা বলে বিষয়টি গ্রাম্য সালিসের মাধ্যমে আপোষ-রফার জন্য বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, খবর পেয়ে বনপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এক কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে যান। এ সময় স্থানীয় ভাবে আপোস রফার কথা শুনে চলে আসেন। তবে সালিশ সন্তোষজনক না হলে থানায় অভিযোগ করতে পরামর্শ দেন ।
বড়াইগ্রাম থানার ওসি মনিরুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেনা এবং থানায় কোন অভিযোগ আসেনি। মঙ্গলবার তিনি বিষয়টি সাংবাদিকদের কাছে শুনে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে ক্ষতিগ্রস্থদের থানায় অভিযোগ দেওয়ার কথা বলেছেন। অভিযোগ না পেলেও তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান তিনি।

(এমআর/পি/অাগস্ট ০৪, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test