E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

নীতিমালা লংঘন করে বড়াইগ্রামে স্কুল প্রতিষ্ঠা, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সরকার ও প্রতিষ্ঠান

২০১৫ আগস্ট ০৪ ২২:২৪:৫২
নীতিমালা লংঘন করে বড়াইগ্রামে স্কুল প্রতিষ্ঠা, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সরকার ও প্রতিষ্ঠান

নাটোর প্রতিনিধি : সর্বশেষ সরকারি নীতিমালা অনুসারে মফস্বলে নতুন মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত করতে হলে পাশের বিদ্যালয় হতে নূন্যতম ৪ কিলোমিটার দূরত্ব হতেই হবে। অথচ নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার দ্বারিকুশি প্রতাবপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি পাশের রামেশ্বরপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাত্র ৯০০ মিটার দূরত্বে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে। এতে শিক্ষকরা লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে উভয় প্রতিষ্ঠান ও সরকার।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, বড়াইগ্রাম উপজেলার রামেশ্বরপুর গ্রামের লোকজন ১৯৯৫ সালে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত করেন। বিদ্যালয়টি যথানিয়মে একাডেমিক স্বীকৃতি ও সরকারি মঞ্জুরী লাভ করে। মাত্র এক কিলোমিটার ব্যবধানে পরের বছর (১৯৯৬) কিছু লোক দ্বারিকুশি-প্রতাবপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় নামে আরও একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিা করেন। কিন্ত সর্বশেষ (২০০৩) বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত নীতিমালা (পরিশিষ্ট-ক: মফস্বলে একই শ্রেণির দুটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ব্যবধান হতে হবে নূন্যতম ৪ কিলোমিটার) লংঘিত হওয়ায় রাজশাহী শিক্ষাবোর্ড দ্বারিকুশি-প্রতাবপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে একাডেমিক স্বীকৃতি দেয় না। বাধ্য হয়ে তাঁরা শ্রেণি পরিবর্তন করে বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। এতে প্রতিষ্ঠানটি একাডেমিক স্বীকৃতি ও মঞ্জুরী লাভ করে। দীর্ঘদিন পর ২০১৩ সালে দ্বারিকুশি-প্রতাবপুর বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় মন্ত্রণালয়ে সহশিক্ষা চালুর আবেদন করে। এ ব্যাপারে রামেশ্বরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আপত্তি জানানো হয়। কর্তৃপক্ষ আশঙ্কা প্রকাশ করে মন্ত্রণালয়কে জানায় যে, ছাত্র (বালক) ভর্তির সুযোগ দিলে রামেশ্বপুর বিদ্যালয়ে ছাত্র সঙ্কট দেখা দিবে। মন্ত্রণালয় বিষয়টি যাচাইবাছাই করে সহশিক্ষার আবেদন অগ্রাহ্য করে।

এ অবস্থায় দ্বারিকুশি-প্রতাবপুর বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে গোপনে রামেশ্বরপুর উচ্চ বিদ্যালয়কে পাস কাটিয়ে অপেক্ষাকৃত দুরবর্তী জোনাইল, শ্রীরামপুর, উপলশহর ও কচুগাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের অনাপত্তিপত্র গ্রহণ করে তা মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়ে সহশিক্ষার জন্য নতুন করে আবেদন করেন। স্থানীয় প্রশাসনও প্রভাবিত হয়ে নতুন কৌশলের ফাঁদে পা দেন। ২০১৪ সালের শেষ দিকে তারা সহশিক্ষা চালুর অনুমতি লাভ করে। যার খারাপ প্রভাব উভয় বিদ্যালয়ে পড়তে শুরু করেছে। ২০১৫ সালেই রামেশ্বরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ছাত্র সঙ্কট দেখা দেয়। গতবছর ওই বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণীতে ৭৭ জন ছাত্র ভর্তি হলেও এবার সেখানে মাত্র ২৩ জন ভর্তি হয়েছে। অন্যদিকে দ্বারিকুশি-প্রতাবপুর বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছাত্র ভর্তির সুবাদে নতুনকরে শিক্ষক নিয়োগের সুযোগ পেয়েছে। এতে সরকারকে একই সংখ্যক শিক্ষার্থীর পড়ালেখার জন্য অতিরিক্ত খরচ জোগাতে হচ্ছে। রামেশ্বরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সরওয়ার হোসেন জানান, তাদের বিদ্যালয়টি সবচেয়ে নিকটে। অথচ তারা সহশিক্ষার আবেদনের সাথে তার বিদ্যালয়ের কথাই উল্লেখ করেননি। এটা সুস্পষ্ট বিধি লংঘন। এর ফলে তাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কমে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে একসময় উভয় প্রতিষ্ঠানের সরকার নির্ধারিত শিক্ষার্থীর নূন্যতম সংখ্যা ঠিকরাখা সম্ভব হবে না। অথচ সরকারের ব্যায় বাড়বে।

দ্বারিকুশি প্রতাবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম জানান, শুধু বালিকা বিদ্যালয় হওয়ায় ছাত্রী সংকট ছিল বলে সহ-শিক্ষা চালু করা হয়েছে। আর সহ-শিক্ষা চালু করতে মন্ত্রণালয়েল চাহিদা মোতাবেক পাশের ৪টি বিদ্যালয় থেকে অনাপত্তিপত্র নেওয়া হয়েছে। তবে সবচেয়ে কাছের রামেশ্বরপুর বিদ্যালয়ের অনাপত্তিপত্র নেওয়া হয়নি কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন,‘যে কোন চারটি বিদ্যালয় হলেই চলে, তাই প্রয়োজন পড়েনি।’

স্থানীয় প্রশাসন এই অনিয়ম কেন মেনে নিয়েছেন তা জানতে চাইলে বড়াইগ্রামের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুহুল আমিন জানান, ‘তিনি সবে মাত্র যোগদান করেছেন। এবিষয়ে তার কিছু জানা নেই। তবে অনুসন্ধান করে বিধি সম্মত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(এমআর/পি/অাগস্ট ০৪, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test