E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বাগেরহাটে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে জোয়ারের পানিতে ৯০টি গ্রাম প্লাবিত

২০১৫ আগস্ট ০৫ ২১:০৭:৫৮
বাগেরহাটে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে জোয়ারের পানিতে ৯০টি গ্রাম প্লাবিত

বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটে নদনদীতে অস্বাভাবিক জোয়ারে পানি বৃদ্ধির ফলে বিভিন্ন স্থানে বেড়িবাঁধ উপচে ও ভেঙে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে নদী তীরবর্তি হাঁট-বাজার, মিল, কল-কারখানা, মাছের ঘের, পুকুর, ফসলি জমিসহ কমপক্ষে ৯০টি গ্রামের হাজার- হাজার ঘরবাড়ি। এলাকাবাসি জানায়, বাগেরহাটে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) দৈবজ্ঞহাটি ও নাজিরপুর প্রকল্পের বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকে ঘরবাড়ি এবং ফসালি জমি তলিয়ে গেছে বাগেরহাট পৌরসভা, মোরেলগঞ্জ পৌরসভা, কচুয়া বাগেরহাট সদর উপজেলার যাত্রাপুুর বাজার এবং এসব এলাকার সংলগ্ন ৯০টিগ্রাম। এসব গ্রামের বাঁধ উপচে জোয়ারের পানি লোকালয়ে ঠুকে পড়েছে। ফলে জলমগ্ন ওই সকল এলকার হাজার-হাজার পরিবার এখন মানবেতর জীবন যাপন করছে। বুধবার দুপুরে জোয়ারের পানির চাপে ভৈরব নদী তীরবর্তি বেড়িবাঁধ ভেঙে বাগেরহাট সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের কোড়ামারা মধ্যপাড়া এলাকার নতুন করে কয়েশ ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব এলাকার মানুষ এখন মানবেতর জীবন যাপন করছে। দ্রুত বেড়িবাঁধটি সংঙ্কারের দাবি জানান তিনি।

এদিকে গত জুলাই মাস জুড়ে থেমে থেমে ভারী বর্ষণ, বৃষ্টির পানি নামতে না পারায় জলাবদ্ধতা ও জোয়ারের পানিতে বাগেরহাটে ১'শ হেক্টর সবজি ক্ষেত ৩'শ হেক্টর জমির বীজতলা তলীয়ে যাওয়ায় মানবেতর জীবন-যাপন করছে জেলার দুই লক্ষধিক চাষী। বাগেরহাট জেলার প্রায় ৮ হাজার হেক্টর জমিতে এবার সবজির চাষ করেছিল কৃষকরা। তার মধ্যে ১'শ হেক্টর জমির সবজি বৃষ্টির পানি, জলাবদ্ধা ও জোয়ারের পানিতে নষ্ট হওয়ার কারণে বিভিন্ন এনজিও ও ধারকর্জ করে সবজির চাষ করা এসব চাষীরা এখন সর্বশান্ত হয়ে পড়েছে। আর সবজি ক্ষেত করা অনেক চাষী এখন ছেলে-মেয়ে নিয়ে খেয়ে না খেয়ে মানবেতর জীবন যাবন করছেন। আর পরিমান জমির সবজি নষ্ট হওয়ার কারনে জেলার সবজি চাষীদের ২০ লাখ টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে বলে বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (খামারবাড়ী) সূত্রে জানাগেছে। চলতি বছরের আমন মৌসুমে জলাবদ্ধতার শিকার হয়ে জেলার ৩'শ হেক্টর জমির বীজতলা নষ্ট হয়ে প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (খামারবাড়ী) সূত্রে জানাগেছে। আর এ পরিমাণ ক্ষতির শিকার হয়ে বাগেরহাট সদরসহ উপজেলার ধান চাষিরা এখন সর্বশান্ত। এ অবস্থায় জেলার অনেক চাষী এখন পেশা পরিবর্তন করে অন্য পেশায় নিয়োজিত হচ্ছে। আর কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতি স্বত্বেও সরকারের তরফ থেকে কোন ধরণের ত্রান বা সাহায্য সহযোগীতা না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জলাবদ্ধার শিকার হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অনেক চাষী।

বাগেরহাট সদরের বানিয়াগাতি গ্রামের সবজি চাষি বলরাম বাইতি বলেন, গত বছর এনজিও থেকে ঋন নিয়ে করলা, লাউ, শসা, কুমড়া, বরবটি, কাকরোল, বেগুন, পুইশাক ও পেপেসহ বিভিন্ন সবজির চাষ করেছিলাম তাতে ভালোই লাভ হয়েছিল। তাই অধিক লাভের আশায় এবার এনজিও থেকে বেশি পরিমাণ ঋণ নিয়ে ৩০ শতক জমিতে সবজির চাষ করেছিলাম। টানা বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে ক্ষেতের সবজি এখন পানির নিচে থাকায় লাভ তো দূরের কথা এনজিওর ঋণও পরিশোধ করতে পারবো না।

বাগেরহাট পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাইনদ্দিন বলেন, পূর্ণিমার জোয়ারের জেলার সকল নদ-নদীর পানি দুই থেকে তিন ফিট বৃদ্ধি পেয়ে। এতে ঝুঁকিপূর্ণ ও ভেঙে যাওয়া বাঁধ গুলোর মেরামত কাজ চলছে।

(একে/পি/অাগস্ট ০৫, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test