E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

গোপালগঞ্জে স্টরয়েড বিহীন কোরবানীর গরু

২০১৫ সেপ্টেম্বর ১১ ১৭:৩৪:৪০
গোপালগঞ্জে স্টরয়েড বিহীন কোরবানীর গরু

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি: গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার সোনাখালি গ্রামে অন্ততঃ আড়াইশ পরিবার। এসব পরিবার তাদের প্রধান আয়ের পথ বেঁছে নিয়েছে গরু মোটাতাঁজা করা।

প্রতিবছরই তারা কোরবানীর হাটে গরু বিক্রি করে তার লাভের টাকায় সারা বছর চলেন। বাড়ির চারিদিকে পানি। জমিতে ফসল নেই। তাতেও কিন্তু তারা জীবন সংগ্রামে ভেঙ্গে পড়েননি। বেছে নিয়েছেন গরু পালন ব্যবসাকে। যুগযুগ ধরে পূর্ব পুরুষদের এ ব্যবসাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন নতুন প্রজন্ম। প্রতিটি পরিবারই এ ব্যবসার সাথে জড়িত। সোনাখালি ছাড়াও তারাইল, গোপালপুর, বরৈভিটা, কুরপালাসহ ১০ গ্রামের মানুষ ও এ পেশাকে বেছে নিয়েছে।

দেশের বিভিন্ন স্থানে স্টরয়েড দিয়ে গরু মোটা-তাজা করা হলেও গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার ১০ গ্রামের চিত্র ভিন্ন। বিল বেষ্টিত এসব গ্রামের বাসিন্দারা সম্পূর্ন প্রাকৃতিক নিয়মে গরু মোটা-তাজা করে থাকেন। কোরবানীর হাটকে সামনে করে তাদের এ গরু পালন।

কোরবানীর ৫/৬ মাস আগে ছোট গরু ক্রয় করে তারা লালন পালন করে বড় করেন। এখানকার ব্যবসায়ীদের বিশেষত্ব হলো তারা গরু মোটাতাজা করতে কোন স্টরয়েড ব্যবহার করে না। প্রাকৃতিক ঘাষ, খইল, ভূষি, ধানের খড় ইত্যাদি গরুর খাবার হিসাবে ব্যবহার করেন। সেই সাথে প্রাণি সম্পদ বিভাগের বুদ্ধি-পরামর্শ নিয়ে তারা এ পেশা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রাকৃতিক নিয়মে গরু মোটা-তাজা করায় এখানে গরুর চাহিদাও বেশি। এসব এলাকার গরু গোপালগঞ্জ, বাগেরহাট, খুলনা ও বরিশালের বিভিন্ন কোরবানির হাটে বিক্রি হয়ে থাকে।

সোনাখালী গ্রামের গরু পালনকারী কিবরিয়া তালুকদার, চুন্নু তারুকদার, মিরাজ গাজী, রাসেল গাজী জানান, আমরা গরু মোটাতাজা করতে কোন ওষুধ ব্যবহার করিনা। প্রাকৃতিক ঘাস ও অন্যান্য খাবার খাইয়ে গরু মোটাতাজা করি। ইনজেকশন দেয়া গরু দ্রুত বিক্রি করতে না পারলে লাভের থেকে লোকসান হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে। আমাদের প্রধান পেশাই হলো গরু মোটাতাজা করা। আমরা কোরবানীর হাটে গরু বিক্রির লক্ষ্য নিয়ে এ ব্যবসা করি বলে জানালেন তারা।

কোটালীপাড়া উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ সৌরেন্দ্র নাথ সাহা জানান, শুধু কোটালীপাড়ার বিভিন্ন গ্রামেই এবছর ৯ হাজার গরু প্রাকৃতিক নিয়মে মোটাতাজা করা হচ্ছে। এসব গরু আগামী কোরবানীর হাটে বিক্রি হবে। এখানকার গরু পালনে কোন স্টরয়েড ব্যবহার করা হয়না।

কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মিকাইল জানান, এলাকার মানুষের প্রধান পেশা যেহেতু গরু মোটাতাজা করা, সেহেতু এ এলাকার মানুষের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন করা দরকার এবং এদেরকে সহজ শর্তে ঋণ দেয়ার প্রয়োজনীয়তার উপর তাগিদ দিলেন তিনি।

গোপালগঞ্জ জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ আতাউর রহমান চৌধুরী গরু পালনকারীদের জন্য কম সুদে ঋণ দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক এমন আশ্বাস দিয়ে বলেন, আগামীতে হয়তো তাদেরকে চড়া সুদে আর ঋণ নিতে হবেনা। এতে তারা লাভবান হবেন। তিনি সব গরু চাষীকে প্রাকৃতিক নিয়মে গরু মোটাতাজা করার পরামর্শ দেন।

এ অঞ্চলের গরু পালনকারীদেরকে স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা করা হলে ব্যবসার পরিধি বেড়ে যাবে এবং দেশে মাংসের চাহিদা অনেকটা এখান থেকে মেটানো যাবে বলে অভিজ্ঞমহল মনে করেন।

(এমএইচএম/এলপিবি/সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test