E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

এ কেমন শিক্ষক!

২০১৫ নভেম্বর ২২ ২১:৪৪:৫৪
এ কেমন শিক্ষক!

গাজীপুর প্রতিনিধি :বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণ, অতপর ৫ মাসের অন্ত:সত্তা ছাত্রীর গর্ভপাত ঘটনানো। সর্বশেষ দরিদ্র ছাত্রীর পরিবারকে হুমকী দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মশিউর রহমান ভুঁইয়া ছোটন (৩২) নামে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। ছোটন গাজীপুর সদরের বাড়িয়া ইউনিয়নের কয়ের উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজীর শিক্ষক।

সে বড় কয়ের গ্রামের প্রভাবশালী হাফিজ উদ্দিন ভুঁইয়ার ছেলে। ঘটনা জানাজানির এলাকাবাসী, স্কুলের শিক্ষার্থী ও অবিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
নির্যাতিতা ছাত্রী একই গ্রামের বাসিন্দা এবং ওই স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্রী। ছাত্রীর বাবা একজন করাত কল শ্রমিক।

এদিকে ছাত্রীর মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের এক জরুরী সভায় অভিযুক্ত শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত এবং ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

রবিবার দুপুরে বাড়িতে গেলে নির্যাতিতা ছাত্রী জানায়, সে শিক্ষক ছোটনের কাছে স্কুলে প্রাইভেট পড়ত। গত মে মাসের মাঝামাঝি একা পেয়ে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্লাশ রুমেই তাকে ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে সে গর্ভবতী হয়ে পড়লে শিক্ষক ছোটনকে জানায়। ছোটন তাকে ৫ হাজার টাকা দিয়ে গর্ভপাত ঘটানোর কথা বলে। গর্ভপাতের পর বিয়ে করবে বলেও জানায় শিক্ষক। পরে ছাত্রী ঘটনাটি তার মা-বাবাকে জানালে মা গত ১০ নভেম্বর টঙ্গীর একটি বাসায় যায় গর্ভপাত করানোর জন্য। সেখানে ইনজেকশন ও ওষুধ খাইয়ে দেয়া হয়। পরের দিন ১১ নভেম্বর বাড়িতে মেয়েটির গর্ভপাত ঘটে। গর্ভপাত হওয়া ছেলে নবজাতকটিকে ছাত্রীটির মা গোপনে বাড়ির পাশের বিলের পানিতে ফেলতে গেলে, স্থানীয়রা তা দেখে ফেলে। পরে বিষয়টি প্রকাশ পায়। ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হয়ে গেলে ওই লম্পট ছোটন ছাত্রী এবং তার মাকে বাড়িতে ডেকে পাঠায়। সেখানে ছোটনের মামা সাবেক ইউপি মেম্বার নাজিম উদ্দিন ও পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতি প্রথমে ৩০ হাজার ও পরে এক লাখ টাকা নিয়ে এ বিষয়ে মুখ না খুলতে ছাত্রী ও তার মাকে চাপ সৃষ্টি করে। টাকা নিতে অস্বীকার করে ছাত্রী বিয়ে ছাড়া আর কোন দাবি নেই জানিয়ে বাড়ি ফিরে আসে। রবিবার ছাত্রীটির মা ঘটনার বিচার চেয়ে বড় কয়ের উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে অভিযোগ করেন।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রতন কুমার সাহা জানান, ছাত্রীর সঙ্গে ইংরেজীর শিক্ষক মশিউর রহমান ছোটনের ঘটনাটি তিনি শুনেছেন। ছাত্রীটির মায়ের একটি অভিযোগও পেয়েছেন। বিষয়টি স্কুল পরিচালনা পরিষদের সভাপতিসহ সংশ্লিষ্টদের জানানো হয়েছে। কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

ছাত্রীটির চাচা জানান, তাঁর বড় ভাই ছাত্রীর বাবা একজন দরিদ্র স’মিল শ্রমিক। অপর দিকে ওই শিক্ষক ও তার পরিবার এলাকায় প্রভাবশালী। ঘটনা নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার জন্য, শনিবার তার মোবাইলে অজ্ঞাত ব্যক্তি হুমকী প্রদান করেছেন।

বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সদস্য গোলজার হোসেন কবির রবিবার সন্ধ্যায় জানান, এ ঘটনায় এক জরুরী সভায় অভিযুক্ত শিক্ষক মশিউর রহমান ছোটনকে সাময়িক বহিস্কার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে কেন তাকে স্থায়ী ভাবে বহিস্কার করা হবে না ৭ দিনের মধ্যে তার জবাবা দিতে বলা হয়েছে। এছাড়াও ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

জয়দেবপুর থানার পূবাইল পুলিশ ক্যাম্পের এসআই ফায়জুর রহমান জানান, বিষয়টি জানার পর তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বাদির অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।


(এসএবি/এসসি/নবেম্বর২২,২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test