E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নতুন জটিলতায় খানজাহান আলী বিমান বন্দর নির্মাণ প্রকল্প

২০১৬ জুন ০৬ ১৬:৪৮:০৪
নতুন জটিলতায় খানজাহান আলী বিমান বন্দর নির্মাণ প্রকল্প

বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটের হযরত খানজাহান আলী পুর্ণাঙ্গ বিমান বন্দর নির্মাণে নতুন করে আরো ৫৩৬ একর জমি অধিগ্রহণ ও চিহ্নিতকরণে সৃষ্ট জটিলতা সমাধানে মঙ্গলবার সকালে সচিবালয়ে বিমান ও পর্যটন মন্ত্রনালয়ে আন্ত:মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে ডাকা হয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মধ্যে মতপার্থক্যের কারণে সৃষ্টি হয়েছে বড় ধরনের জটিলতা।

এছাড়াও মংলা- খুলনা রেল লাইনের একটি অংশ খানজাহান আলী বিমান বন্দরের নতুন সমীক্ষায় জমির মধ্যে দেড়শ’ ফিটের মতো ঢুকে পড়েছে বলে স্বীকার করেন প্রকল্পের পরিচালক মো. মুজিবুর রহমান। সৃষ্ট বড় ধরনের এই সমস্যা সমাধানে আন্ত:মন্ত্রণালয়ের আজকের বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হবে।

বিমান ও পর্যটন মন্ত্রনালয় সূত্রে জানা গেছে, বাগেরহাটের ফয়লায় হযরত খানজাহান আলী বিমান বন্দর নির্মাণে জমি অধিগ্রহণ ও মংলা- খুলনা রেল লাইন এই বিমান বন্দরের জমির মধ্য দিয়ে যাওয়ায় নতুন করে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ বিমান বন্দর নির্মাণ করতে আগের ৯৪ একরের সাথে নতুন করে আরো ৫৩৬ একর জমি অধিগ্রহন করা হবে। সেজন্য বাগেরহাটের জেলা প্রশাসন জমির দাগ নম্বর উল্লেখ করে কারকার জমি অধিগ্রহণ করা হবে তার সমীক্ষার কাজও শেষ করেছে।

এমন অবস্থায় মংলা-খুলনা রেলাইনের একটি অংশ খানজাহান আলী বিমান বন্দরের জমির উপর দিয়ে যাওয়ায় নতুন করে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও নতুন সমীক্ষায় মংলা- খুলনা মহাসড়কের একাংশ পড়েগেছে খানজাহান আলী বিমান বন্দরের নকশার মধ্যে।

এজন্য বিমান মন্ত্রণালয় চাচ্ছে রেল লাইন ও মহাসড়কের জমি বাদ দিয়ে তাদের সুবিধামত স্থান দিয়ে জমি অধিগ্রহণ করতে। এতে আপত্তি জানিয়েছেন স্থানীয় এমপি তালুকদার আব্দুল খালেক। তিনি বলছেন, উত্তর-পূর্ব সাইট দিয়ে বিমান বন্দরের জমি অধিগ্রহনের কথা। এখান থেকে সরে দক্ষিণ- পুর্ব পাশের ফয়লা বাজারের শত-শত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বসত বাড়ী উচ্ছেদ করে জমি অধিগ্রহণ করা হলে তার পক্ষে সহযোগিতা করা সম্ভব হবে না। এই জটিলতায় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত খানজাহান আলী বিমানবন্দর নির্মাণে আরো ৫৩৬ একর জমি অধিগ্রহনে নতুন করে বড় ধরনের জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব আলাহউদ্দিন জানান, আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি যাতে করে দ্বিতীয় দফা জমি অধিগ্রহণের কাজ দ্রুত শুরু করতে পারি। সমস্যা সমাধানে আজ সকালে সচিবালয়ে আন্ত:মন্ত্রণালয়ের বৈঠক হবে। ওই বৈঠক থেকেই সিদ্ধান্ত হবে বাগেরহাট খানজাহান আলী বিমান বন্দরের জমি অধিগ্রহণ কোথা থেকে কিভাবে করা হবে। সভায় প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রনালয়ের সচিব, স্থানীয় সাংসদ তালুকদার আব্দুল খালেক ও বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মো. জাহাংগীর আলমসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গত বছরের ৫ মে একনেকের সভায় ৫৪৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয় পূর্ণাঙ্গ বিমানবন্দর রূপে বাগেরহাট খানজাহান বিমান বন্দর প্রকল্পটি পাশ হয়। এই টাকার মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে দেয়া হচ্ছে ৮০ ভাগ ও বেসিচক তহবিল থেকে দেয়া হচ্ছে ২০ ভাগ টাকা। ২০১৮ সালের জুন মাসের মধ্যে এই বিমান বন্দর প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে আরও ১৬৩ হেক্টর জমি অধিগ্রহনের প্রয়োজন দেখা দেয়। এই জমি অধিগ্রহনের জন্য বাগেরহাটের জেলা প্রশাসকের কাছে ইতিমধ্যে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ৪৩ কোটি টাকা দিয়ে দিয়েছে।

প্রকল্প প্রস্তাবনায় নতুন করে অধিগ্রহনকৃত এই ভূমির উন্নয়ন ও মাটি ভরাট করতে ব্যায় হচ্ছে আরো ৩০ কোটি ৩২ লাখ টাকা। এছাড়া আধুনিক পূর্নাঙ্গ বিমান বন্দর হিসেবে প্রকল্পের মধ্যে আরও রয়েছে, ইলেক্ট্রো ম্যাকানিকেলে ১৫ কোটি ৮০ লাখ টাকা, ফায়ার সাভিস খাতে ১৫ কোটি টাকা, টার্মিনালসহ ১৮ হাজার ৫৬৪ বর্গ মিটার আবাসিক ভবন নির্মাণে ১১ কোটি ৬৬ লাখ টাকা, এয়ারফিল্ড গ্রাউন্ড লাইটিং (এজিএল), ৭ হাজার মিটার রানওয়ে ও ট্যাক্সিরওয়ে নির্মাণে ৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা, সীমানা প্রাচীর নির্মাণে ৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা, পানি সরবরাহ খাতে ৫ কোটি ১৭ লাখ টাকা, এক হাজার ও ৫০০ কেভির দুটি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র নির্মানে ৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা, পরামর্শক সেবা খাতে ৬ কোটি ৯ লাখ টাকা, জ্বালানী পরিবহন খাতে ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা, এম্বুলেন্সসহ যানবাহন কিনতে ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা, ব্যাগেজ এক্ররে, হ্যান্ড মেটাল ডিটেকটর, লিফট ও টেলিফোন কিনতে ব্যায় ধরা হয়েছে ৪ কোটি ১০ লাখ টাকা এবং প্রকল্পের জনবল খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৮৭ লাখ টাকা।

(একে/এএস/জুন ০৬, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test