E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

যৌতুক নিয়ে নিত্য নতুন বিয়ে করে জুয়া খেলাই তার পেশা

২০১৭ মে ১৫ ১৫:০৭:৩২
যৌতুক নিয়ে নিত্য নতুন বিয়ে করে জুয়া খেলাই তার পেশা

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : জেলার বিভিন্ন অজপাড়া গাঁয়ে ঘটকদের মাধ্যমে খোঁজ-খবর নিয়ে টার্গেট মতো পরিবারে গিয়ে বর সেজে হাজির হন ঠাকুরগাঁও জেলাধীন হরিপুর উপজেলার কাঁঠালডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা ও চিহ্নিত জুয়ারু মো: হুসেন আলী(৪৫)।

একটা-দুইটা নয়,প্রতারণা করে একে একে বিয়ে করেছেন সাত-সাতটি।তবে সংসার করার উদ্দেশ্যে তিনি এ বিয়েগুলো করেননি।করেছেন নিজের ব্যক্তি স্বার্থে আর স্বার্থ সিদ্ধি হলেই সে স্ত্রীকে ছুড়ে ফেলে দিয়েছেন আস্তা কুড়ে।

তিনি বিভিন্ন কৌশলে এমন পরিবারগুলোকে টার্গেট করতেন যারা তার নির্যাতনের প্রতিবাদ করার সাহস পাবে না। তার সর্বশেষ শিকার ছিল বালিয়ীডাঙ্গী উপজেলার দুওসুও ইউনিয়নের বাসিন্দা তমিজউদ্দিনের মেয়ে মোছা: তহমিনা(৩০)।

গত সাত মাস আগে পার্শ্ববতী নেকমরদ ইউনিয়নের মীরডাঙ্গী এলাকার ঘটক আকাশ ও আলীম সহ মেয়ে খুজতে আসেন।সেসময় তিনি বলেন তার পুর্বের স্ত্রী গলায় ঘা হয়ে মারা গেছে এজন্য তিনি ২য় বিয়ে করছেন।মেয়ে পছন্দ হওয়ায় তিনি সেদিনেই নগদ ৩০ হাজার টাকা ও এক লাখ নব্বই হাজার টাকা দেনমোহরে তাহমিনাকে বিয়ে করে হরিপুরের কাঁঠালডাঙ্গীতে নিয়ে যান।কিন্তু সেখানে গিয়ে রাত পেরোতেই শুরু হয় তাহমিনার উপর শারীরিক ও মানষিক নির্যাতন।জুয়া খেলার টাকার জন্য প্রতিনিয়ত শারীরিক নির্যাতন করতে থাকে হুসেন আলী।প্রথম দিকে মেয়ের সুখের কথা ভেবে দিনমজুর বাবা কিছু টাকা-পয়সা ধার-মহাজন করে পাঠালেও থেমে থাকেনি স্ত্রী তহমিনার উপর নির্যাতন।

এদিকে তহমিনা এলাকাবাসি ও হুসেন আলীর আত্মীয়দের মাধ্যমে জানতে পারে সে তার ২য় স্ত্রী নয় সপ্তম স্ত্রী।এর আগে তার আরো ছয়টি বিয়ে হয় এবং সে স্ত্রীগুলোও হুসেন আলীর নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে স্বামীকে ছেড়ে পালিয়ে যায়।এদের মধ্যে এক নাবালিকাও ছিল।তবে তার প্রথম স্ত্রী অসুখে মারা যায়।

এদিকে সাত মাস যাবৎ নির্যাতন সহ্য করতে করতে অবশেষে তাহমিনাও স্বামী হুসেন আলীর চতুরতার কাছে হার মেনে বাবার বাড়ীতে এসে আশ্রয় নেয়।

নির্যাতিত তাহমিনা জানায়,সে আমাকে ফোনে হুমকি দিয়ে বলে "তোর বাপকে বোকা বানিয়ে তোকে বিয়ে করেছি,কিছুই টের পাইসনি।তুই আর আমার বিরুদ্ধে কি করতে পারবি।কিছু করার থাকলে করিস!

তাহমিনা জানায়, আমার একটাই দাবি এ রকম জুয়ারু,নারী লোভী ও নারী নির্যাতনকারীকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে সুষ্ঠ বিচার করা হোক।আমার তো জীবন নষ্ট হয়ে গেছে,যাতে আর কোন বোন এরকম প্রতারকের পাতানো ফাঁদে না পড়ে।

অপরদিকে তাহমিনার স্বামী হুসেন আলী ২০১৫ সালে তার তালাক দেওয়া স্ত্রীকে নিয়ে আবার ঘর-সংসার শুরু করেছে বলে জানা যায়।

এ ব্যাপারে হুসেন আলীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে (০১৭৭৪৪৬০৫৬৫)কয়েকবার ফোন দিলেও সে ফোন ধরেনি।

এ বিষয়ে তাহমিনার চাচা জিয়াউর রহমান,চাচী জহুরা খাতুন ও বেগম বলেন,জুয়ার টাকার জন্য জামাই আমাদের ভাস্তিকে যে পরিমান নির্যাতন করেছে তা বলার ভাষা নেই। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠ বিচারের দাবি জানাই।

(এফআইআর/এসপি/মে ১৫, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

০২ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test