E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শীতের আগমনে ব্যস্ততা বেড়েছে লেপ-তোশকের কারিগরদের

২০২৩ ডিসেম্বর ১১ ১৬:১৮:১২
শীতের আগমনে ব্যস্ততা বেড়েছে লেপ-তোশকের কারিগরদের

স্বপন কুমার কুন্ডু, ঈশ্বরদী : হেমন্তের শেষে শীতের আগমন ঘটেছে। উত্তরের হিমেল বাতাস বইছে, আর ভোরে ঘাসের ডগায় জমে থাকা শিশির বিন্দুই বলে দিচ্ছে শীত এসেছে। এখন আর কাঁথা বা হালকা কম্বল গায়ে দিয়ে রাত কাটছে না। শীতের তীব্রতা অগ্রাহায়নের শেষে টের পাওয়া যাচ্ছে। তাইতো ঈশ্বরদীর নিকটাবর্তী পদ্মার চরাঞ্চল এবং গ্রামাঞ্চলের মানুষ আগেভাগেই লেপ-তোশক বানাতে শুরু করেছেন।

উত্তরাঞ্চলের প্রবেশদ্বার বলে স্বীকৃত ঈশ্বরদীতে শীত পড়ার সাথে সাথে ধুনকারদের (লেপ-তোশকের কারিগর) তুলা ছাঁটাই ও লেপ তৈরির কাজে কর্মচাঞ্চল্য বেড়েছে। লেপ-তোশকের কারিগরদের এখন দম ফেলার সময় নেই। কেউ কেউ পুরনো লেপ ভেঙে নতুন করে বানিয়ে নিচ্ছেন। আবার কেউ নতুন তুলা দিয়ে তৈরি করছেন লেপ, তোশক ও বালিশ। অপরদিকে শহরের পাড়া-মহল্লায় ও গ্রামে লেপ-তোশকের ফেরিওয়ালাদের হাঁকডাকও ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে। মৌসুমি ফেরিওয়ালারা শীত এলে রিকশা-ভ্যানে করে লেপ-তোশক বিক্রিতে নেমে পড়েন। তারা নগদ টাকার পাশাপাশি কিস্তিতেও লেপ-তোশক বিক্রি করেন।

ঈশ্বরদীতে শীত ও গড়ম দুটোই বেশি পড়ে। বাজারে বিভিন্ন ধরনের শীত বস্ত্র ও আধুনিক ভারী কম্বল থাকলেও লেপের তুলনা নেই। লেপ ব্যবহারের আগ্রহ সবার মধ্যেই। ঈশ্বরদী পৌর শহরের আলহাজ্ব মোড় এলাকায় ১০টিরও বেশি লেপ-তোশকের দোকান রয়েছে। প্রতিদিন সকাল থেকে শুরু করে রাত পর্যন্ত কাজ চলছে প্রতিটি দোকানে। দোকানগুলোতে কারিগরদের কর্মব্যাস্ততা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, শিমুল তুলার কেজি ৬৫০-৭০০ টাকা, কার্পাস তুলা ৩১০ থেকে ৩৬০ টাকা কেজি , কালো উল ৮৫ থেকে ৯০ টাকা, কালো রাবিশ তুলা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, সাদা তুলা ১১০ টাকা থেকে ১৩০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। গত বছরের তুলনায় তুলার দাম বাড়ার সাথে সাথে কাপড়ের দামও বেড়েছে প্রতি গজে ১০ থেকে ১৫ টাকা। প্রতিটি লেপ-তোষক তৈরিতে খরচ ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা বেড়েছে বলে ধুনকাররা জানিয়েছে। মাঝারি ধরনের একটি লেপ বানাতে খরচ হচ্ছে ১,২০০ থেকে ২,০০০ টাকা। তোষক বানাতে ১,৫০০ থেকে ২,৫০০ টাকা খরচ হয়। তবে দামী-কমদামী বিভিন্ন রকমের তুলার প্রকারভেদে লেপ-তোষকের দাম কম-বেশি হয়ে থাকে।

বাজারে গার্মেন্টস ঝুট দিয়ে তৈরি সিঙ্গেল তোষক ৫০০ থেকে ৯০০ টাকা এবং ডবল তোষক সাইজ অনুযায়ী এক হাজার ৫শ থেকে এক হাজার ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। গত বছর শিমুল তুলা ছিল ৪শ টাকা কেজি। গার্মেন্টস ঝুট গত বছর ২৫/৩০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও এবারে ৮০/৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তোষক বিক্রেতা আরমান খন্দকার। অন্যান্য তুলাও কেজি প্রতি ৬০/৭০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান বিক্রেতারা।

দাশুড়িয়া বাজারের দোকানদার বারেক নিজেই ধুনকারের কাজ করেন। তিনি বলেন, ক্রেতারা লেপ-তোষক বানাতে দিচ্ছেন। অর্ডার পেয়ে আমি ও কারিগররা লেপ-তোষক বানাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছি। একজন কারিগরের একটি লেপ তৈরিতে সময় লাগে ২-৩ ঘণ্টা। এভাবে একজন কারিগর দিনে গড়ে ৪ থেকে ৫ টি লেপ তৈরি করতে পারে। তুলার দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় লেপ-তোষক, গদি তৈরিতে খরচ গত বছরের চেয়ে খরচ বেড়েছে। শীতের তীব্রতা যতো বাড়বে বেচা-কেনা আরও জমবে বলে আশা করছেন তিনি।

(এসকেকে/এসপি/ডিসেম্বর ১১, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

০৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test