E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ষষ্ঠ দফা উপজেলা নির্বাচনে সক্রিয় জাপা

২০১৪ মে ১৮ ১৪:০৬:১৭
ষষ্ঠ দফা উপজেলা নির্বাচনে সক্রিয় জাপা

স্টাফ রিপোর্টার : বৃহত্তর রংপুরে জাতীয় পার্টির জোরালো জনসমর্থনের কথা নতুন করে বলার কিছু নেই। কিন্তু উপজেলা নির্বাচনের পাঁচ পর্বের ফলাফল দলটির এই জনভিত্তির সঙ্গে মানানসই না কোনোমতেই।

বিশেষ করে দলের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জেলাতে চার উপজেলায় আওয়ামী লীগ, বিএনপি, স্বতন্ত্র এমনকি জামায়াত সমর্থিত প্রার্থীর জয় তৈরি করে বিস্ময়।

নির্বাচনের ফলাফল যতটা না অবাক করেছে, এরচেয়ে বেশি অবাক করেছে এই নির্বাচনগুলোতে জাতীয় পার্টির নিষ্ক্রিয়তা। কাগজে-কলমে নির্দলীয় হলেও উপজেলা নির্বাচনে দলগুলো নিজেদের জনপ্রিয়তা প্রমাণের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেও একেবারেই চুপ করে বসেছিল জাতীয় পার্টি। তিনটি উপজেলায় জাতীয় পার্টির নেতারা চেয়ারম্যান হিসেবে জিতলেও সেটা দল নয়, ব্যক্তি হিসেবে লড়েছেন তারা।

তবে শেষ দফা নির্বাচনে অন্তত রংপুরে এই ধারা পাল্টাতে চাইছে সংসদে প্রধান বিরোধী দল। ১৯ মের ভোটকে ঘিরে সক্রিয় হয়ে উঠেছে দলটি। এবার এই জেলায় ভোট হচ্ছে চারটি উপজেলায়। সদর, গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া এবং পীরগাছার প্রতিটিতেই একক প্রার্থী সমর্থন দিয়েছে জাতীয় পার্টি। দলের কর্মী-সমর্থকদের সক্রিয় করতে উদ্যোগী হয়েছেন স্বয়ং জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।

৩ মে রংপুরে হঠাৎ করেই এরশাদের চার দিনের সফর এই উপজেলা নির্বাচনকে ঘিরেই। জেলাটিতে গিয়েই তিনি তার পল্লীনিবাসের বাসায় দলীয় নেতাকর্মী এবং প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ সময় তিনি চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানদের নির্বাচনী প্র¯‘তি সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। ১৯ মে রংপুরের চার উপজেলায় দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন।

দলের প্রধানের এই নড়াচড়ার পর জাতীয় পার্টির নিষ্ক্রিয় কর্মীরা নেমেছে গা-ঝাড়া দিয়ে। দলের সব স্তরের কর্মী-সমর্থকই নেমে পড়েছেন তাদের নেতার পক্ষে। তাই জাতীয় পার্টি সমর্থিত প্রার্থীরা জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।

জাতীয় পার্টির নেতারা বলছেন, এটা কেবল চারটি উপজেলায় জয়ের বিষয় নয়, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া নিয়ে দলের মধ্যে নানা বিভ্রান্তির কারণে ঝিমিয়ে পড়া দলকে চাঙ্গা করার শুরু হিসেবেই দেখছেন নেতারা।

মাত্র কদিন আগে দলের রুহুল আমিন হাওলাদারকে পাল্টে জিয়াউদ্দিন বাবলুকে মহাসচিব করেছে জাতীয় পার্টি। দায়িত্ব নিয়েই দলকে চাঙ্গা করার চ্যালেঞ্জের কথা জানিয়েছেন বাবলু। দায়িত্ব পাওয়ার পর দলীয় কার্যালয়ে নিয়মিত বসছেন বাবলু।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক দলের এক নেতা বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আমাদের দলে সমস্যা ছিল । এ কারণেই আমরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিতে পারি নাই। আমরা আমাদের এই সমস্যা কাটিয়ে উঠেছি। তাই আমরা এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। এ ধারাবাহিকতায় আগামীতে সব নির্বাচনে অংশ নেব।

জানতে চাইলে জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়া উদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, আমরা এই নির্বাচনে দলগতভাবেই অংশ নিচ্ছি। নির্বাচনের ফলাফল নিয়েও আমরা আশাবাদী। তবে সক্রিয় হতে গিয়ে আগের পাঁচ দফায় আওয়ামী লীগ-বিএনপির মতো জাতীয় পার্টিতেও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমস্যা তৈরি হয়েছে। একজনের বদলে একাধিক নেতা নির্বাচন করতে উৎসাহী হয়ে উঠেছেন।

জানতে চাইলে জিয়া উদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, ‘বিদ্রোহী প্রার্থীদের নির্বাচনের মাঠ থেকে সরাতে আমরা কাজ করছি। আশা করি দুই-একদিনের মধ্যেই তারা দলীয় প্রার্থীদের সমর্থন দিয়ে নির্বাচনের মাঠ থেকে সরে যাবে।’

প্রথম ধাপে রংপুরের তিনটি উপজেলায় নির্বাচন হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে হয়েছে আরেকটি। এই চারটি উপজেলাতেই নির্বাচনের ফল গেছে অন্য দলগুলোর পকেটে। রংপুরের মিঠাপুকুর চেয়ারম্যান পদ দখল করেছে জামায়াত। সেখানে জাতীয় পার্টির একজন নেতা থাকলেও দলের সমর্থন পাননি তিনি। পীরগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান পদটি চলে যায় বিএনপির দখলে। এখানেও নিষ্ক্রিয় ছিল জাতীয় পার্টি, বরং বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করে দলের নেতা-কর্মীরা। বদরগঞ্জে উপজেলা চেয়ারম্যান দখলে নেয় আওয়ামী লীগ এবং তারাগঞ্জ দখলে যায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর।

প্রথম পাঁচ দফা নির্বাচনে জাতীয় পার্টির তিন জন নেতা জিতেছেন গাইবান্ধার সাঘাটা, নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ এবং কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলায়।

(ওএস/এটিআর/মে ১৮, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

০৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test