E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

অবৈধ বাধ কাটা পরিদর্শনে বাগেরহাটে মন্ত্রী ও সংসদীয় কমিটি সভাপতি

২০১৫ আগস্ট ০৭ ১৮:৫৭:৫৩
অবৈধ বাধ কাটা পরিদর্শনে বাগেরহাটে মন্ত্রী ও সংসদীয় কমিটি সভাপতি

বাগেরহাট প্রতিনিধি : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে অবশেষে সরকারি খাল দখলমুক্ত করতে প্রভাবশালীদের চিংড়ি খামারের অবৈধ বাধ আপসারণের কাজ দেখতে আসেন মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ এবং মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ্যাডভোকেট মীর শওকাত আলী বাদশা এমপি।

বৃহস্পতিবার দুপুরে তারা বাগেরহাটের মংলা-ঘষিয়াখালী আর্ন্তজাতিক নৌরুটের সাথে সরাসরি সংযুক্ত রামপালে অবৈধ বাঁধ দিয়ে আটকে রাখ সরকারি খালের বাঁধ অপসারণেন স্থান পরিদর্শন করেন।

এসময়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানান হয়, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ৫আগষ্ট থেকে প্রভাবশালীদের দখলে থাকা ১৩টি সরকারী খালের ২৩টি অবৈদ বাঁধ অপসারণ করা হয়েছে। অবৈধ বাঁধ দিয়ে আটকে রাখা ৮২টি খালের ২শতাধিক অবৈধ বাঁধ অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন নির্বাহী ম্যাজিট্রেস্টদের নেতৃত্বে ৫টি মোবাইল টিম সরকারি খালের এসব অবৈধ বাঁধ অপসারণ কাজ চালিয়ে যাবে জেলা প্রশাসন।

বাগেরহাটের মংলা-ঘষিয়াখালী আর্ন্তজাতিক নৌ চ্যানেলটির ৮২টি সরকারি শাখা খালগুলো স্থানীয় শাষকদলের এক শ্রেনীর প্রবাবশালী নেতা অবৈধ বাঁধ দিয়ে চিংড়ি খামার গড়ে তোলায় পানির প্রবাহ কমে পলি পড়ে ৩ বছর আগে ভরাট হয়ে যায় চ্যানেলটি। এরপর বন বিভাগের বাধা উপেক্ষা করে বিআইডবি¬উটিএ বিকল্প রুট হিসেবে মংলা বন্দর হয়ে সুন্দরবনের শ্যালা নদী দিয়ে সব ধরনের জাহাজ চলাচল শুরু করে। এই অবস্থায় গত বছরের ৯ ডিসেম্বর ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সুন্দরবনের শ্যালা নদীতে ফার্নেস অয়েল বোঝাই ট্যাংকার ডুবির ঘটনা ঘটে। তেল ছড়িয়ে পড়ে সুন্দরবনে। সুন্দরবনকে বাঁচাতে ছুটে আসতে হয় খোদ জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞদের। ৩শ’কোটি টাকা ব্যয়ে বিআইডব্লিউটিএ ভরাট হয়ে যাওয়া মংলা-ঘষিয়াখালী আর্ন্তজাতিক নৌ চ্যানেলটির রামপাল নদী ড্রেজিংএর কাজ শুরু করে।

মংলা-ঘষিয়াখালী আর্ন্তজাতিক নৌ চ্যানেলটির ‘টাইডাল ব্যসিনের’ পানির প্রবাহ ঠিক রাখতে চ্যানেলটির সাথে সরাসরি সংযুক্ত সকল সরকারী খাল উম্মুক্ত রাখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তখন ভিডিও কনফারেন্সে খুলনার বিভাগীয় কমিশনারকে নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশের পর গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর খুলনার বিভাগীয় কমিশনার নিজে উপস্থিত থেকে আর্ন্তজাতিক এই নৌ চ্যানেলটির সরকারি শাখা খালগুলোর অবৈধ বাঁঁধ আপসারন কাজের উদ্বোধন করেন। তখন সরকারের বিপুর অর্থ ব্যায়ে চ্যালেনটির সাথে সরাসরি সংযুক্ত মংলা ও রামপাল উপজেলার ৩২টি খালের দুই শতাধিক অবৈধ বাঁধ উচ্ছেদ করে প্রশাসন। পুন:খনন করা হয় অনেক সরকারি খাল। কয়েক মাস পরে স্থানীয় শাষকদলের এক শ্রেণীর প্রবাবশালী নেতা আবারো অবৈধ বাঁধ দিয়ে খালগুলোতে চিংড়ি খামার গড়ে তোলা।

এ বিষয়টিসহ সুন্দরবনের নদী-খাল শাষকদলের এক শ্রেণীর প্রভাবশালী নেতাদের দখলে নেয়ার একাধিক সংবাদ গত মাসে বাংলাদেশ প্রতিদিনের শেষ পাতায় গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশিত হয়।

বিষয়টি নজরে আসে প্রধানমন্ত্রীর। গত ২৯ জুলাই রাজধানীতে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের আনুষ্ঠানিক উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,‘সুন্দরবনে কে এত প্রভাবশালী ? সুন্দরবনের নদী-খাল ও জলাশয় দখল করে অনৈতিক ভাবে মাছ চাষ করছে। এটা বিশ্বের সর্ববৃহত ম্যানগ্রোভ ফরেষ্ট ও এর সংলগ্ন নদী ও খালগুলোর জন্য ক্ষতিকর।’ এসব অপকর্মের সাথে জড়িত প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।

সরেজমিনে গিয়ে মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দকে ব্যবস্থা নিতে বলেন। প্রধানমন্ত্রীর এই কঠোর নির্দেশের পর তেলপাড় শুরু হয় প্রশাসনে। অবশেষে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসন স্থানীয় শাষকদলের এক শ্রেণীর প্রভাবশালী নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযানে নামে।

(একে/এএস/আগস্ট ০৭, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

০৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test