E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

গাইবান্ধায় যৌতুকের দাবিতে গৃহবধুর হাত-পা বেঁধে নির্যাতন

২০১৬ ফেব্রুয়ারি ১১ ১৬:০৩:১৩
গাইবান্ধায় যৌতুকের দাবিতে গৃহবধুর হাত-পা বেঁধে নির্যাতন

গাইবান্ধা প্রতিনিধি: যৌতুক দিতে না পারায় স্বামী, শ্বাশুড়ি ও জায়ের ছেলেসহ কয়েকজন মিলে সুমি বেগম (২৮) নামে এক গৃহবধুকে হাত-পা বেঁধে গাছের ডাল দিয়ে বেধরক মারপিট করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মারপিটে গৃহবধুর তলপেট, কোমরের নিচ ও গলাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুত্বর ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে সুমি বেগম গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডের ৪ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন।  গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের পুনতাইর উত্তরপাড়া গ্রামে আজ বৃহস্পতিবার সকালে  এ ঘটনা ঘটে।

গৃহবধু সুমি বেগমের বাড়ী গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের তরুনীপাড়া গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের মেয়ে।

নির্যাতিত সুমি বেগম বলেন, প্রায় দেড় যুগ আগে উপজেলার মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের পুনতাইর উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত গোলজার রহমানের ছেলে আফজাল হোসেনের (৪০) সাথে বিয়ে হয় তার। বিয়ের কয়েক মাস পর আফজাল হোসেন সুমির নিকট যৌতুক বাবদ এক লাখ টাকার দাবি করে আসছিল। কিন্তু সুমি বেগম দাবিকৃত যৌতুকের টাকা না দিতে স্বামীর পরিবারের পক্ষ থেকে তার ওপর চালানো হয় অমানষিক নির্যাতন। এরই এক পর্যায়ে আফজালের ঔরসজাত সুমির গর্ভে পর্যায় ক্রমে ২টি মেয়ে ও ১টি ছেলে সন্তান ভূমিষ্ট হয়। সন্তান তিনটির ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে শত নির্যাতন সহ্য করে আসছিলেন। এদিকে অভাব অনটনের কারণে স্বামী আফজাল গাজীপুরের একটি গার্মেন্টসে চাকুরি করার সুযোগে শাশুড়ি রাহিলা বেগম ও জা’য়ের ছেলে সজিবদের নির্যাতন বেড়ে যায়। এক পর্যায়ে নিরুপয় হয়ে সুমি সন্তান তিনটিকে নিয়ে মৃত বাবার বাড়ি তরুনীপাড়ার বাড়িতে আশ্রয় নেয়।

এদিকে দীর্ঘ কয়েক বছর পর আফজাল গাজিপুর থেকে নিজ বাড়ীতে আসেন এবং মোবাইল ফোনে অভয় দিয়ে সুমি বেগমকে বাড়ীতে আসতে বলেন। সুমি স্বামীর কথা সরল মনে বিশ্বাস করে সকালে স্বামীর বাড়ীতে আসেন। এরপর তাকে বাড়ীর পশ্চিম দুয়ারী একটি টিনসেড ঘড়ে শাশুড়ি রাহিলা বেগম ডেকে নেয়। এ সময় ঘরের মধ্যে শাশুড়ি, স্বামী ও জা’য়ের ছেলেসহ ৫/৬ জনকে দেখতে পান সুমি। পরে দাবিকৃত যৌতুক দিতে না পারায় তারা তাকে বেধড়ক মারপিট করতে থাকে। এসময় তারা তল পেটে ও কোমরে লাথি দেয়। এরপরেও তারা ক্ষান্ত না হয়ে দু’হাত-পা রশি দিয়ে বেঁধে ঘরে থাকা আকাশমনি গাছের ডাল দিয়ে ব্যাপক মারপিট করে। এতে জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তাকে রিকশাভ্যান যোগে বাবার বাড়ী তরুনীপাড়া গ্রামে পাঠিয়ে দেয়। পরে পরিবারের লোকজন তাকে হাসপাতালে ভর্তি করান।

হাসপাতালের ওয়ার্ড ইনচার্জ জিলান আকন্দ জানান, ব্যাপক মারপিট করায় সুমি বেগমের শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্ন রয়েছে। তার চিকিৎসা চলছে।

গোবিন্দগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হক জানান, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি। তবে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(আরএ/এস/ফেব্রুয়ারি১১,২০১৬)

পাঠকের মতামত:

০৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test